‘আগ্রাসনের শিকার শিশুদের আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে “রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বন্ধ, সকল খুনী ও ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির” দাবি জানিয়ে সাজেকের মাজলঙে র্যালি ও সমাবেশ করেছে অগ্রসর শিশু-কিশোর কেন্দ্র (এসিসি)।
আজ বুধবার (৪ জুন ২০২৫) দুপুর ১২টার সময় “সভ্য উন্নত সমাজ, রাষ্ট্র-সরকার ও নিরাপদ, সম্মান-মর্যাদাপূর্ণ জীবন চাই” শ্লোগান সম্বলিত ব্যানার নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে মাজলং বাজারে একটি র্যালি বের করেন শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা। র্যালিটি মাজলং বাজার প্রদক্ষিণ শেষে তারা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
সমাবেশে সীমা চাকমার সভাপতিত্বে ও ঝরনা চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন শুক্র চাকমা ও সুখী চাকমা।
পার্বত্য চট্টগ্রামে শিশুরা রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হওয়ার অভিযোগ করে শুক্র চাকমা বলেন, সরকার যেখানে সুষ্ঠু সমাজ বিনির্মাণ ও নিরাপত্তা দিয়ে শিশুদের গড়ে তোলার কথা সেখানে শিশুদের ভবিষ্যত নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় শিশু-কিশোররা বাদ যায়নি। শিশুদের সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। কখনো কখনো জীবন বাঁচাতে স্কুল ব্যাগ হাত নিয়ে পালিয়ে যেতে হয় গহীন অরণ্যে।
তিনি বলেন, গত বছর বান্দরবানে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ভানথাংপুই বমকে (১১) হত্যার বিচার এখনো হয়নি। সেখানে ব্যাংক ডাকাতি ঘটনাকে কেন্দ্র করে মা ও শিশুদের এখনো কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে। আমরা এই রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন থেকে মুক্তি চাই। নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন-যাপন করতে চাই।
সুখী চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শিশু, বয়োজ্যেষ্ঠ, নারী, পুরুষ কেউই নিরাপদ নয়। রাষ্ট্রীয় মদদে খুন, গুম, অপহরণ, ধর্ষণের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে বান্দরবানের থানচিতে দুই সন্তানের মা এক খেয়াং নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। ২০১৮ সালে খাগড়াছড়ি দীঘিনালা সড়কের মাইল এলাকায় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী কৃত্তিকা ত্রিপুরার ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যার বিচার এখনো হয়নি।
সভাপতির বক্তব্যে সীমা চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে হত্যা, গুম, অপহরণ, ধর্ষণের ঘটনা আন্তর্জাতিক তদন্তে মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন বন্ধের দাবি জানিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষ করেন।