এক সময় সোনালী আঁশ খ্যাত পাট ছিল উত্তরাঞ্চলের কৃষকদের অন্যতম আয়ের উৎস। গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখত এই ফসল। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়া, কৃষি খাতে ব্যয় বৃদ্ধি ও ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় দিন দিন বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী পাট চাষ। লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় এখন আর আগের মতো চোখে পড়ে না সবুজ পাটক্ষেত।
পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন কৃষকেরা। স্থানীয় কৃষক মোঃ মোজাম্মেল উদ্দিন দৈনিক গণকন্ঠ কে বলেন,
“পাট চাষে আগে যা লাভ হতো, এখন আর হয় না। সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ-সব কিছুর দাম বেড়েছে পাটের দাম তেমন বাড়ে নাই, এবছর একটু পাটের চাহিদা ছিল কৃষকরা এবার একটু দাম বেশি পেয়েছে।
আদিতমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ উমর ফারুক দৈনিক গণকণ্ঠকে বলেন “পাট চাষে লাভজনকতা কমে যাওয়ায় কৃষকের আগ্রহ কমেছে। এছাড়া পাট কাটার পর জাগ দেওয়ার জায়গা ও শ্রমিক সংকটও বড় সমস্যা।”
তিনি আরও বলেন,
“সরকার পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে। এতে কিছুটা বাজার চাঙা হচ্ছে। আমরা কৃষকদের উচ্চ ফলনশীল জাত ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করছি, সরকারি অনুদানের সার ও বীজের দেওয়া হচ্ছে আশা করি আগামীতেও চাষ বৃদ্ধি পাবে।”
কৃষক কৃষক মোঃ আলম মিয়া দৈনিক গণকণ্ঠকে বলেন ন্যায্য দাম পাই না। তাই বাধ্য হয়ে ধান তামাক কিংবা ভুট্টার দিকে ঝুঁকছি।”
একই সুর আরেক কৃষক আফতাবুর রহমানের কণ্ঠেও তিনি জানান,
“আগে পাঁচ বিঘা জমিতে পাট করতাম, এখন করি মাত্র এক বিঘায়। শুধু ঐতিহ্যটা ধরে রাখার জন্য করি। লাভ তো নেই।”
আদিতমারী উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী,২০১৮ সালে উপজেলায় প্রায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হতো। কিন্তু ২০২৫ সালে তা নেমে এসেছে মাত্র ৩৫৫ হেক্টরে। অর্থাৎ, পাঁচ বছরের ব্যবধানে প্রায় শতকরা ০৫ শতাংশ জমিতে পাট চাষ হচ্ছে।