1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ১১:২৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
যশোরের বাঘারপাড়ার মেয়ে ইশরার সাফল্য: টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ কুড়িগ্রামের শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ ভূরুঙ্গামারী থানার ওসি আল হেলাল মাহমুদ নওগাঁর নিয়ামতপুরে এনসিপির নেতার জমি দখলের অভিযোগ নওগাঁতে স্বাস্থ্য সহকারীদের ৬ দফা দাবীতে অবস্থান রায়পুর সরকারি কলেজে ছাত্রদলের স্মারকলিপি প্রদান, শিক্ষার পরিবেশ ও অবকাঠামো উন্নয়নের ৮ দফা দাবি বরিশালে সেতুর রেলিং ভেঙ্গে খালে যাত্রীবাহী বাস টাঙ্গাইল বাঘিল বাস-সিএনজি’ সং*ঘ*’র্ষে মা-ছেলেসহ নি*’হ*’ত তিন নাচোলে ইউএনও’র বিদায় ও নবাগত ইউএনও’র যোগদান প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল এ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন (পার্টনার)”প্রকল্প অনুষ্ঠিত হলো মোংলায় মাশরুম চাষে সফলতা লাভ করেছেন মোংলা চিলা ইউনিয়নে মোঃ রবিউল ইসলাম

লোহার খাঁচায় সন্তান নিয়ে পথে নেমেছেন জান্নাত

জসীমউদ্দীন ইতি
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০২৫
  • ৬৪ বার পড়া হয়েছে

লোহার তৈরি খাঁচা, উপরে ছাউনি, খাঁচার সঙ্গে চাকা লাগিয়ে নেওয়া গাড়িতে যমজ ৩ শিশুসন্তানকে নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন এক অসহায় মা। তার সঙ্গে হাঁটছে আরেকটি শিশু। বয়স ৩ বছর ৬ মাস।  ৪ সন্তানের মা জান্নাত বেগমের সঙ্গে কথা হয় ঠাকুরগাঁও সদরে। মলিন পোশাক, চেহারায় বিষণ্নতা, দু’চোখে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন দু’মুঠো খাবারের সন্ধানে। ১৩ মাস বয়সী ৩ যমজ শিশু আব্দুল্লাহ, আমেনা ও আয়েশা। তাদের চেয়ে ৬ মাসের বড় মরিয়ম। অবুঝ ৪ সন্তানকে নিয়ে জীবনের অথৈ সাগর পাড়ি দিচ্ছেন জান্নাত বেগম।

তিনি জানান, বছরপাঁচেক আগে ঢাকায় তার বিয়ে হয় হাবিলের সঙ্গে। প্রেমের বিয়ে। বিয়ের পর ঠাকুরগাঁও চলে আসেন স্বামীর সঙ্গে। তার বাবার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়। শুরুর কিছুদিন সংসার ভালোই চলছিল। প্রথমে এক কন্যা সন্তানের পর যমজ ৩ সন্তানের মা হন জান্নাত বেগম। এরপরই তার জীবনে নেমে আসে দোজখ। সন্তান, স্ত্রীকে ছেড়ে চলে যান হাবিল।  এরপর থেকেই ৪ শিশুসন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়েন এই অসহায় মা। যেভাবেই হোক, সন্তানদের জন্য তিনি অনেক ভেবে বেঁচে থাকার একটা উপায় বের করেন। তিনি চলে যান কামারের দোকানে। তাদের বলে দুটি চাকা লাগানো একটি লোহার খাচা বানিয়ে নেন। সেই খাচার ভেতর ৩ শিশুকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন ভিক্ষাবৃত্তিতে।

জান্নাত বেগম বলেন, তিন পোলা-মাইয়া নিয়া তো আর হাঁটা যায় না। তাই গাড়ি বানাইছি। বিভিন্ন সময় অনেকেই সন্তানদের কিনে নিতে লাখ লাখ টাকার প্রস্তাব দিছে। আমি রাজি হই নাই। সন্তানের প্রতি মায়ার কাছে হার মেনেছে টাকার লোভ। তারপরও জীবনযুদ্ধে হার মানেননি জান্নাত বেগম। তিনি বলেন, আমি সাহায্য তুলে দিনযাপন করছি। যা আপমানের, লজ্জার। কিন্তু এ ছাড়া আমার তো কোনো উপায় নাই। বাসাবাড়িতে কাজের প্রস্তাব পাইছি। কিন্তু ছোটো ছোটো বাচ্চা, কার কাছে রেখে যাব? ৭ হাজার টাকা খরচ করে খাঁচাসহ গাড়ি বানিয়েছেন জান্নাত বেগম। সন্তানদের এই খাঁচায় নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে সাহায্য তোলেন। যদিও খুব বেশি সহযোগিতা তিনি পান না।

ঘুরে বেশি পরিমাণে টাকা পাই না। সন্তানদের পুষ্টিকর খাবারও কিনে দিতে পারি না। অনেক সময় তো পেট ভরে খাবারও দিতে পারি না, বলেন জান্নাত বেগম।  রোকসানা পারভীন। জান্নাতের প্রতিবেশী। তিনি বলেন, যে কোনো নারীর পক্ষে এত ছোটো ছোটো ৪টি বাচ্চা লালন-পালন করা কষ্টকর। সেখানে তাকে লালন-পালনের পাশাপাশি উপার্জনের দায়িত্ব নিতে হচ্ছে। জান্নাতকে দেখলেই বোঝা যায় একটা মানুষ কতটা অসহায় হতে পারে।

আরেক প্রতিবেশী শারমিন হাসান বলেন, অনেক সময় তার বাচ্চাদের কান্নার শব্দ শুনলে খারাপই লাগে। এত ছোটো ছোটো বাচ্চা! বিত্তশালীরা কত কত জায়গায় সাহায্য-সহযোগিতা করে, কিন্তু জান্নাতকে সাহায্য করতে সেভাবে কেউ এগিয়ে আসেনি।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা খায়রুল ইসলামের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টা জানা ছিল না। আমি দ্রুত খোঁজখবর নেব।

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com