মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে অনুমোদনবিহীনভাবে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালিত হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃশ্যমান পদক্ষেপ না থাকায় চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন সাধারণ রোগীরা। নানা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও অভিযোগের প্রেক্ষাপটেও এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এখনো উল্লেখযোগ্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৩৫টিরও বেশি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কার্যক্রম চালাচ্ছে। এর মধ্যে অল্প কয়েকটির বৈধ অনুমোদন থাকলেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই লাইসেন্সবিহীন এবং নীতিমালাবহির্ভূতভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগেই নেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, প্রশিক্ষিত নার্স, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কিংবা জরুরি চিকিৎসা সেবা। এমনকি টিনশেড ভবনেও চলমান রয়েছে এই স্বাস্থ্যসেবা ব্যবসা, যা সম্পূর্ণভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নীতিমালার পরিপন্থী।
এ বিষয়ে স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের প্রশ্ন “উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের নাকের ডগায় বছরের পর বছর কিভাবে অনুমোদনহীন স্বাস্থ্য ব্যবসা চলতে পারে? কারা দিচ্ছে প্রশয়?
কাদের ছত্রছায়ায় শিবচরে অনুমোদনহীন হাসপাতালের বাণিজ্য ফুলে-ফেঁপে?
তাদের অভিযোগ, পর্যবেক্ষণে অবহেলা, নিয়ম-নীতির যথাযথ প্রয়োগ না থাকা এবং প্রশাসনিক জবাবদিহিতার দুর্বলতাই এসব অনিয়মের মূল কারণ।
স্থানীয় এক শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “হাসপাতালের সাইনবোর্ড থাকলেই তা হাসপাতাল হয় না। মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা হচ্ছে, অথচ কার্যকর নজরদারি নেই। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।”
এ বিষয়ে মন্তব্য নিতে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি “সিভিল সার্জনের অনুমতি ছাড়া মন্তব্য করা যাবে না” বলে মত প্রকাশ করেন। তবে জেলা পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টায় বার বার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, তিনি অসুস্থ রয়েছেন।
তবে ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. সরদার মোহাম্মদা খালেকুজ্জামান বলেন “আমরা এ সকল অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি তালিকা প্রস্তুত করেছি এবং এদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে স্থানীয় জনগণ দ্রুত অভিযান পরিচালনা, অবৈধ প্রতিষ্ঠান বন্ধ, লাইসেন্স নবায়ন, মান নিয়ন্ত্রণ এবং দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।