আর মাত্র কয়েকদিন পরেই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল আজহা।ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে,ততই বাড়ছে কামারদের ব্যস্ততা।বছরের অধিকাংশ দিন অলস সময় পার করলেও ঈদে কোরবানির পশু জবাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ধারালো সরঞ্জাম দা,ছুরি, চাপাতি ও বঁটি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এখানকার কামাররা।কয়লা ও লোহার দাম বৃদ্ধি,অন্যদিকে দক্ষ শ্রমিকের অভাব।তবুও যুগযুগ ধরে এ পেশা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
গতকাল রবিবার দুপুরে সলঙ্গা বাজার কদমতলা ও বিকেলে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মাহমুদপুর গ্রামের কামারপট্টিতে গিয়ে দেখা যায়,কামারদের হাতুড়ি পেটা টুংটাং শব্দ।আর কয়লার চুলায় জ্বলছে ধাও ধাও আগুন। হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন অগ্নিস্ফুর্ত লোহার খণ্ড।কেউ দা- ছুরিতে শাণ দিচ্ছে।কেউবা হাপর টানছে।ভোর থেকে শুরু করে মধ্যরাত পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে কাজ করছেন কারিগররা।
বছরের এই সময়টাতে পশু জবাই ও চামড়া ছাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত নানা ধরনে ছুরি,চাপাতি,দা,বঁটি সাজিয়ে কামারীরা।
সলঙ্গা থানার ৬ টি ইউনিয়নের হাটবাজার ও গুরুত্বপুর্ণ স্থানে কামারদের কাছে বর্তমানে প্রতি পিস বটি ৪৫০-৬০০ টাকা,চাপাতি কেজি ৬০০-৮০০ টাকা,ছোট ছুরি সর্বনিম্ন ১৫০-৩০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে জবাই করার ছুরি ৬০০-১০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সলঙ্গা বাজার কদমতলার কামারশিল্পী আব্দুস সামাদ বলেন, একসময় আমাদের এখানে অনেক দোকান থাকলেও তবে এখন কমতে কমতে আমাদের অল্প কয়েকটি দোকান আছে মাত্র।বাজারে চায়না জিনিসপত্র বেড়ে যাওয়ায় আগের মত এখন আর কাস্টমার আসে না। শুধু কোরবানি আর ধান কাটার সময়ই আমাদের কাজের চাপ বাড়ে।
কামারশিল্পী হাসেম আলী বলেন, কয়েকদিন ধরে কাজের চাপ বাড়েছে।কোরবানির আগের দিন পর্যন্ত আমাদের চাহিদা আছে।সারা বছর তেমন কাজের খবর থাকে না। সরকার থেকেও কোন ধরনের সহযোগিতা আমরা পাই না।রামকৃষ্ণপুরের কারিগর আইয়ুব,রেজা অভিযোগ করে বলেন, পরিশ্রমের তুলনায় মজুরি অনেক কম।এ ছাড়াও সলঙ্গা থানামোড়ের ক্রেতা রমজান আলী,চড়িয়া মধ্যপাড়ার হোটেল ব্যবসায়ী হাফিজ,বওলাতলার হাফিজ মাস্টার জানান,গত বছরের তুলনায় এবার পশু জবাইয়ের সরঞ্জামের দাম কিছুটা বেশি মনে হচ্ছে।বিএনপি নেতা আফছার আলী জানান,সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সলঙ্গা অঞ্চলে দিনদিন কমে যাচ্ছে কামার সম্প্রদায়।সহজ কিস্তিতে ঋণ ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দরকার।