গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া রেলওয়ে পাওয়ার হাউস মাঠে হস্ত কুটির শিল্প পণ্য ও পাটবস্ত্র মেলায় প্রবেশ টিকিটের বিপরীতে লটারি নামের একটি অভিনব প্রতারণার কায়দায় ফেলে ভাগ্য পরীক্ষা চলছে। অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন মহলকে রীতিমতো উৎকোচ প্রদান ও বেকার যুব সমাজকে কর্মবিমুখ করে যত্রতত্র মেলার টিকিট বিক্রির জন্য উদ্বুদ্ধ করে পরিচালনা করা হচ্ছে মেলা নামক লটারির র্যাফেল ড্র। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, জাহাঙ্গীর নামের জনৈক ব্যক্তি এ মেলাটি জে.বি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড লাইসেন্সের বিপরীতে সুকৌশলে পরিচালনা করছে। এদিকে, চলতি বছরের আগামী ১০ই এপ্রিল থেকে সারাদেশে এস.এস.সি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, সাঘাটা উপজেলায় ৮টি কেন্দ্রে এস.এস.সি বা সমমান পরীক্ষার্থীর সংখ্যা সর্বমোট ৩ হাজার ৯শ ৫২ জন। একইভাবে পাশের উপজেলা গোবিন্দগঞ্জেও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম নয়। আকর্ষণীয় গান বাজনা ও লোভনীয় অফার দেখিয়ে টিকিট বিক্রি করায় কোমলমতি এ দুই উপজেলার শিক্ষার্থীদের মেলার ব্যাপক অংশ জুড়ে অযাচিত ঘোরাঘুরি লক্ষ্য করা যায়। একদিকে মেলা চলমান অন্যদিকে পরীক্ষার্থীদের আসন্ন এস.এস.সি বা সমমান পরীক্ষা। যেকারণে পরীক্ষার্থীদের পড়ার টেবিলে আটকে রাখা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে একাধিক অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা যায়। সচেতন অভিভাবক মহলে মেলা চলমান থাকায় ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে এবং সন্তানদের সু ফলাফল নিয়েও ব্যাপক দুশ্চিন্তার জন্ম হয়েছে তাদের মনে। এছাড়াও মেলা পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে ক’জন ব্যবসায়ী নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, হস্ত কুটির শিল্প পণ্য ও পাটবস্ত্র নামে এ মেলায় স্থানীয়দের কোনো পণ্য নেই। সিংহভাগই বাহিরের পণ্য। শুধু তাই নয়, মেলা চলায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা গেল ঈদে তেমন কোনো লাভবান হতে পারে নি বলে অভিযোগ অনেকের। সরেজমিন মেলার পরিচালক জাহাঙ্গীরের সাথে কথা হলে তিনি জানান, অনুমোদন নিয়ে মেলাটি পরিচালনা করছেন। এ বিষয়ে সাঘাটার নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মোঃ আল কামাহ তমালকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দেওয়া হলেও ফোন রিসিভ করেননি। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, এভাবে মেলা চলতে থাকলে আর এজন্য পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে এর দায় কার? স্থানীয়দের দাবি, মেলার নামে এই লটারি ও অপ্রয়োজনীয় আয়োজন বন্ধ করা হোক, যাতে শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারে এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে না পড়ে।