সিরাজগঞ্জে সবজি বিক্রেতা নাজমুল ইসলামকে অপহরণ ও নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এম আলী আহমেদ এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন:
১. মো. খাজা মিয়া — পিতা: হায়দার আলী, গ্রাম: পারধুন্দিয়া, গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা
২. মো. এনামুল — পিতা: মৃত ময়েজ উদ্দিন, গ্রাম: হরিনাথপুর বিষপুকুর, গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা
৩. মো. মোজাহিদ — পিতা: মৃত মজিবর শেখ, গ্রাম: দরগাপাড়া, গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা
৪. মো. বসু — পিতা: হায়দার আলী, গ্রাম: পারধুন্দিয়া, গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা
৫. মো. সাইদুল ইসলাম — পিতা: আব্দুর রহমান প্রধান, গ্রাম: মাদারদহ পূর্বপাড়া, গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা
৬. মো. মিলন সরকার — পিতা: নজরুল ইসলাম সরকার, গ্রাম: রামনগর (হাটবাড়ি), সাঘাটা, গাইবান্ধা
বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট শাকিল মোহাম্মদ শরিফুর হায়দার (রফিক সরকার)।
২০১৭ সালের ১০ আগস্ট দুপুরে নওগাঁ জেলার চকগৌরী হাট থেকে সবজি কিনে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন ব্যবসায়ী নাজমুল ইসলাম। পরদিন ১১ আগস্ট ঢাকার আশুলিয়া থানাধীন বাইপাইলে সবজি বিক্রি শেষে বাড়ি ফেরার পথে গাজীপুর জেলার চন্দ্রা এলাকায় পৌঁছালে তাকে অপহরণ করা হয়।
১১ আগস্ট রাত ১২টার দিকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি নাজমুলের মোবাইল থেকে তার স্ত্রী রাবেয়া খাতুনকে ফোন করে অপহরণের বিষয়টি জানায় এবং ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ১২ আগস্ট সকাল ৭টায় বিকাশে টাকা পাঠানোর জন্য একটি নম্বরও দেওয়া হয়।
কিন্তু ওইদিনই সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল গোলচত্বরের উত্তরে রূপসী বাংলা হোটেলের পাশের বটগাছের নিচ থেকে নাজমুল ইসলামের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে নিহতের বাবা বাদী হয়ে সলঙ্গা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে সলঙ্গা থানা পুলিশ সাতজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। রাষ্ট্রপক্ষ ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করে।
দ্য পেনাল কোড, ১৮৬০-এর ৩৯৬ ও ৩৪ ধারায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। মামলার অপর আসামি সাইফুল ইসলাম ওরফে হাজী ছয়ফুল মৃত্যুবরণ করায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।