২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের দিন(৩০ ডিসেম্বর) যশোরের একটি ভোট কেন্দ্রে বোমা হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগের ৯৫ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ফতেপুর ইউনিয়নের হামিদপুর গ্রামের মুন্সী মো. বদরুজ্জামানের ছেলে অ্যাড. মুন্সী মো. মঞ্জুরুল মাহমুদ গতকাল কোতয়ালি থানায় মামলাটি করেছেন।যশোর সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের ক্যাডার বাহিনী বোমা হামলায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছিলেন। সেই ঘটনায় তিনি মামলাটি করেন। পুলিশ এই মামলার এজাহারভুক্ত এক আসামিকে ইতোমধ্যে আটক করেছে।আসামিরা হলেন- ফতেপুর ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের শেখ সোহরাব হোসেন, জব্বার গাজী, সরদার ফরিদ আহমেদ, রফিকুল ইসলাম, তন্ময়, আরিফুল ইসলাম, জাকির হোসেন, শাহাবুদ্দিন, দেলোয়ার হোসেন দিপু, ডেঞ্জার দিপু, আতর আলী, মোকলেছ, মিজানুর রহমান, শফিয়ার রহমান, চাঁদপাড়া গ্রামের মনিরুজ্জামান মনির, মারজন, ফিরোজ, আবু খায়ের, হিরাজ, টিপু সুলতান, তারেক, ইকবাল, নালিয়া গ্রামের টিটো, মুজিবর রহমান, ধানঘাটা গ্রামের হাকিম শেখ, ঝুমঝুমপুরের জাবেদ (আলোচিত সন্ত্রাসী), চয়ন, সবুজ, কুদ্দুস, কাঞ্চন, মশিয়ার রহমান, সেলিম, রাজু, সোহেল, হাসান, ছনু, বাবলু, বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের হালিম বিশ্বাস, রবিউল ইসলাম, আব্দুর রব, বাদশা, মামুন, ময়না, রুস্তম, হামিদপুরের শাহাদৎ হোসেন, শরিফুল ইসলাম, শেখ আলী আকবর, মিল্টন, সীতারামপুরের মাসুম বিল্লাহ, উজ্জল, মতলেব, তবিবর, চাঁনমিয়া, ওমর আলী, দাইতলা গ্রামের হাসান, সাত্তার সরদার, আজগর আলী, রিয়াজুল ইসলাম, আব্দুন সবুর, রফিকুল ইসলাম, নিকমল, ফতেপুর গ্রামের তৌহিদ, তরিকুল ইসলাম, রাজু আহমেদ, মফিজুর রহমান, তবিবর রহমান, ভায়না গ্রামের বাহারুল ইসলাম, আইয়ুব মোল্লা, রফিকুল, আলী মুনসুর, মাহামুদুল, শরিফুল ইসলাম, রাজাপুর গ্রামের সেলিম হোসেন, শহিদুল মাস্টার, বাগডাঙ্গা গ্রামের হরি চাঁদ, বাউলিয়া গ্রামের মাসুদুর রহমান, বায়েজিদ হোসেন, ফরহাদ হোসেন, দাইতলা গ্রামের জিয়াউর রহমান, সুলতানপুরের খালিদ, রাজাপুর গ্রামের আব্দুর রউফ, বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আকরাম হোসেন, জসিম উদ্দিন, শাওন, আল আমিন, হাসনাত, লিয়াকত আলী, রেজাউল ইসলাম, ফতেপুরের শহিদুল মাস্টার, ঝুমঝুমপুরের মনা, খায়ের দাইতলা গ্রামের মারিফুল, হামিদপুরের সরোয়ার ও বাউলিয়া গ্রামের ইউনুচ আলী। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২৫০/৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।মামলায় অ্যাড. মুন্সী মো. মঞ্জুরুল মাহমুদ উল্লেখ করেছেন, আসামিরা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। তারা প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর বেলা ১১টার দিকে উল্লিখিত আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বালিয়াডাঙ্গা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে জোরপূর্বক ঢোকে। তাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা, লাঠি ও জিআই পাইপ ছিলো। ভোটকেন্দ্রে ঢুকে সেখানে উপস্থিত বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যার চেষ্টাসহ জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় এবং এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। এছাড়া তারা হাফিজুর রহমান, মিজানুর রহমান, নাজমুল ইসলাম বাবুল, ওহেদুজ্জামান দুলি, ওসমান গনি, সোহরাব হোসেন, আজিম হোসেন, কামাল হোসেন বাবু, সাইদুর রহমান, মাসুদ, আকরাম হোসেন, আজিম বিশ্বাস ও শরিফুল ইসলামসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অর্ধশত নেতাকর্মীকে মারধর করলে তারা আহত হন। সেই সময় জীবনাশঙ্কায় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করা সম্ভব হয়নি। তবে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন হওয়ায় পরিবেশ অনকুলে এসেছে। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।পুলিশ জানায়, মামলা দায়েরের পর গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এজাহারভুক্ত আসামি নিকমলকে দাইতলা বাজার এলাকা থেকে আটক করে। বুধবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।