পরিবার নিয়ে হতাশায় নিমজ্জিত। সংসারের ভরণ পোষণ করাই কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে শিক্ষকদের জীবনযাপনে। নিজের জীবনের কথা নাই ধরলাম কিন্তু পরিবারে বাবা, মা, ভাইবোন এবং স্ত্রী সন্তান তাদের মুখে দুমুঠো ভাতের ব্যবস্থা করাই কঠিন হয়ে পড়েছে নন- এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের। খেয়ে না খেয়ে তাই দূর্বিষহ জীবনযাপন করতে হচ্ছে বর্তমান সময়ে।
মুখ খোলার উপায় নেই কারণ পেশায় তো খুব মর্যাদাশীল। সমাজ কিংবা রাষ্ট্রে শিক্ষকরা খুব মর্যাদাশীল এবং নামি-দামি। বাস্তবতা হলো ভিন্ন। শিক্ষকরা ক্ষুধার্ত হলেও কারোর নিকট প্রকাশ করার উপায় নেই। চাকরি করে সংসার চালাতে হিমশিম খায় এটা আবার কেমন চাকরি। মুখ খুললেই সকলে তিরস্কার করে কথা বলে। বর্তমান সময়ে তাই স্বীকৃতি প্রাপ্ত নন- এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আছেন চরম বিপাকে। সম্মানি পেশা হিসেবে কারোর নিকট দুঃখ দুর্দশার কথা বলাও যায় না। নিরবে সহ্য করতে হয় অভাবের যন্ত্রণা। পরিবার, সমাজ কিংবা রাষ্ট্রে নেই যথাযথ মর্যাদা।আছে শুধু অবহেলা আর করুণা।
জীবন অতিবাহিত হচ্ছে অভাবের সাথে যুদ্ধ করে । পরিবার বর্গের আশা পূরণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ নন- এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। অনেক শিক্ষক অভাবের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে তাই বর্তমান সময়ে দিনমজুরের কাজও করতে হচ্ছে। কেউ চালাচ্ছে রিক্সা,কেউ অটোরিকশা, কেউ করছে ফুটপাতে ফলের ব্যবসা সহ আরও অনেক ধরনের কাজ করতে হচ্ছে শিক্ষকদের। শিক্ষক হলো জাতি গড়ার নিপুণ কারিগর। সমাজ কিংবা রাষ্ট্রের চালিকা শক্তি। শিক্ষক নিজে অভাবের যন্ত্রণা সহ্য করেও জ্ঞানের আলো ছড়ায় সমাজে। একজন শিক্ষক নিজের জীবনের কথা কখনো গুরুত্ব দিয়ে ভাবেন না। সারাক্ষণ অস্থির থাকে জ্ঞানের আলো ছড়াতে। সেই শিক্ষককে যদি অভাবের সাথে যুদ্ধ করতে হয় তাহলে জ্ঞানের আলো ছড়াবে কীভাবে? দেশে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে কীভাবে? শিক্ষকদের পিছুটান থাকলে সেই প্রভাব শিক্ষা ব্যবস্থার উপর পড়তে বাধ্য। শিক্ষকদের নিরব কান্না দিন দিন বেড়েই চলেছে। কিছু দিন আগে দেখলাম এমপিওভুক্ত হতে না পেরে একজন শিক্ষক আত্মহত্যা করেছে। দীর্ঘদিন অপেক্ষায় ছিল এবার বুঝি এমপিওভুক্ত হবে প্রতিষ্ঠান কিন্তু হয়নি। সেই দুঃখ দুর্দশার জীবন সহ্য করতে পারেননি ঐ শিক্ষক। শেষ পর্যন্ত নিজের জীবন শেষ করে দিল। সে অভাবের যন্ত্রণার নিকট হেরে গিয়ে ছিল।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আবেদন –
এমন ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য শর্ত শিথিল করে হলেও সকল স্বীকৃতি প্রাপ্ত নন- এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার জন্য বিনীত অনুরোধ রইল।
বর্তমান সময়ে অনেক স্বীকৃতি প্রাপ্ত নন- এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছে সেজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জানাচ্ছি সালাম এবং অভিনন্দন। আশা করি সার্বিক দিক বিবেচনা করে সমগ্র স্বীকৃতি প্রাপ্ত নন- এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আওতায় এনে শিক্ষকদের সীমাহীন দুঃখ দুর্দশার হাত থেকে মুক্তি দিবেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি আমাদের মানবতার মা। আপনি আমাদের অভিভাবক। আপনি একটু সদয় হলেই শিক্ষা ব্যবস্থায় ফিরে আসবে সোনালী দিন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন পূরণ হবে এই বাংলায়।