নেত্রকোণা জেলার, পূর্বধলায় উপজেলার বৈরাটি ইউনিয়নের, বৈরাটি গ্রামের মৃত এমএল মিয়ার স্ত্রী জোসনা বেগম (৪৭)নিজ যুবতী মেয়েকে হত্যা পর থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেও শেষ রক্ষা হলো না । অবশেষে জোসনা বেগমকে দীর্ঘ দিন পর সোমবার ৫ মে রাতে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পূর্বধলা থানা পুলিশ।
জানতে পারি, গত ২০২২ সালের ২২ আগস্ট রাতে উপজেলার, বৈরাটি গ্রামের মৃত এমএল মিয়ার মেয়ে সুমী কাউছার (১৮) প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে তাদের বাড়ির পাশে টয়লেটে যায়। টয়লেট শেষে হঠাৎ মেয়ে চিৎকার দিলে মা জোসনা বেগম দৌঁড়ে গিয়ে তার মেয়েকে ঘরে নিয়ে আসার পর মেয়ে মারাযায়। এমন খবর এলাকায় ছড়িয়ে দেয় জোসনা বেগম, খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসলে জোসনা বেগম বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। এদিকে পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করে।পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম জানান, ঘটনার প্রায় ৭/৮মাস পর ময়না তদন্তের রিপোর্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়, ভিকটিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। উক্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীর বিরুদ্ধে পূর্বধলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা নং-০২ তারিখ: ০১-০১-২০২৪ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড, ১৮৬০।
মামলা দায়েরের পর বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করেও ঘটনার রহস্য উদঘাটন সম্ভব হচ্ছিল না। অবশেষে গত ৫মে রাতে গোপন সংবাদ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ভিকটিমের মা জোসনা বেগমকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের পর মামলার বিষয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জোসনা বেগম স্বীকার করেন যে, তার মেয়ে সুমী কাউসারকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন। তিনি কারণ হিসাবে উল্লেখ করেন, সুমী কাউসার তার অবাধ্য হয়ে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করতো, ইতিপূর্বে তার মেয়ে তাকে একাধিকবার শারীরিক আঘাত করাসহ ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে ক্ষতিসাধন করেছিল। বাধা নিষেধ করা স্বত্বেও জনৈক ছেলের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে। ঘটনার দিন গভীর রাতে মোবাইল ফোনে কথা বলেতে থাকে, মোবাইল ফোনে কথা বলতে নিষেধ করলে সুমী কাউসার তাকে শারীরিক আঘাত করে। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে সুমীকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।পূর্বধলা থানার ওসি আরও জানান, আজ মঙ্গলবার সকালে জোসনা বেগমকে নেত্রকোনা কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। সেখানে তিনি মেয়েকে হত্যার দায় স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট ফৌ: কা: বি: ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।