1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
জমকালো আয়োজনে এনআরবি ব্যাংক পিএলসি শ্রীমঙ্গল উপশাখার উদ্বোধন কালিয়াকৈরে ব্র্যাকের অগ্নি প্রকল্পের সার্ভিস ম্যাপিং শেয়ারিং মিটিং অনুষ্ঠিত অস্ত্রের চেয়ে কলমের শক্তি বেশী- জামালপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম ঠাকুরগাঁওয়ে ভুয়া এতিম শিশু দেখিয়ে কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ কোথায় পালিয়েছেন বরিশালের ‘গড’ফাদার’? পবিপ্রবি’র নতুন ভিসি’র যোগদান, সকলের সহযোগিতা কামনা দুমকীতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ছাত্রশিবিরের ক্যারিয়ার বিষয়ক কর্মশালা রাজশাহী কারাগারে বন্দীদের হাতে মারধরের শিকার সাবেক এমপি এনামুল মহাখালীতে ভিক্ষুককে মারধরে হ*ত্যা, বিচারের দাবিতে ফেসবুকে ঝড় সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে বিতর্কিত বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের বহিষ্কারের দাবিতে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ

কোথায় পালিয়েছেন বরিশালের ‘গড’ফাদার’?

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

বরিশাল আওয়ামী লীগের রাজনীতি দীর্ঘ সাড়ে চার দশক ধরে ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর কঠিন নিয়ন্ত্রণে। তিনি বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং তার পিতা ও ছিলেন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, শহীদ আব্দুর রব শেরিনিয়াবাদ। হাসানাত আবদুল্লাহর রাজনৈতিক প্রভাব শুধু তার নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না; তার বড় ছেলে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ছিলেন বরিশাল মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এবং ছোট ছেলে আশিক আব্দুল্লাহর হাতে ও ছিল অনেক ক্ষমতা।

তবে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, বরিশালের এই রাজনৈতিক পরিবারের অবস্থা নাটকীয়ভাবে পাল্টে যায়। দেশজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়ায়, যখন জানা যায় হাসানাত আবদুল্লাহ এবং তার ছেলেরা, তাদের বরিশালের “গডফাদার” হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়, নিখোঁজ হয়ে গেছেন। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়, তারা কোথায় আছেন? বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য হাসানাত আব্দুল্লাহ তার ছোট ছেলে আশিককে নিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে তার মেয়ে অঞ্জুমানারা কান্তা আব্দুল্লাহর আশ্রয়ে আছেন, তিনি নিজেই ভারতের এক প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য।

হাসানাতের মেয়ে কান্তা, বহু বছর ধরে তার বাবার ঘুষের টাকা সংগ্রহ এবং রাজনৈতিক কাজে সহযোগিতা করতেন। বাবার আর্থিক লেনদেন এবং প্রশাসনিক সুপারিশে তার ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো। রাজনীতিতে হাসানাতের বিকল্প পরিকল্পনা হিসেবে, তিনি ভারতকে “সেইফ হোম” হিসেবে ভেবেছিলেন এবং সেখানে প্রচুর সম্পদ গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। সরকারের পতনের আগে তিনি দেশ ছাড়েন, যা স্পষ্টতই তার পূর্ব পরিকল্পনার অংশ ছিল।

হাসানাতের রাজনৈতিক অভিজাত জীবনকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল এক সুদৃঢ় নেটওয়ার্ক, যার মাধ্যমে তিনি টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করতেন। তার দীর্ঘমেয়াদী শাসনকালে বরিশাল ও আশেপাশের অঞ্চল গুলোর সব বড় টেন্ডারের পেছনে ছিল তার শক্ত হাত। তার অনুসারীরা, যেমন গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারিসুর রহমান, এই সব কাজে ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী। এই নেটওয়ার্ক এতটাই সুগঠিত ছিল যে, ইউনিয়ন পরিষদের দরিদ্র কর্মসংস্থানের জন্য টাকা আদান-প্রদান থেকে শুরু করে, প্রতিটি টেন্ডার হাসানাত এবং তার পরিবারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হতো।

অবশেষে, ৫ আগস্ট বিকেলে, জনতার ক্ষোভ উগরে ওঠে। বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালিয়ে বরিশালে কালিবাড়ি সড়কে হাসানাতের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়। বাড়িটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায় এবং আগুনের পর, সেখানে তিনজনের পোড়া মৃতদেহ পাওয়া যায়, যাদের মধ্যে ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি গাজী নাইমুল ইসলাম লিটো। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঘটনার কয়েক মিনিট আগেই হাসানাতের ছেলে সাদিককে বাড়ির ছাদে দেখা গিয়েছিল। এর পরপরই তিনি বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। তার সঙ্গী ছিলেন স্ত্রী ও সন্তান।

প্রবল গণআন্দোলনের মধ্যে, বরিশালে আরও একটি বড় ঘটনা ঘটে ১৩ আগস্ট। সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর মেজো ছেলে মঈন আব্দুল্লাহ নিজের পুড়ে যাওয়া বাড়ি দেখতে আসেন এবং মায়ের কবর জিয়ারত করে চলে যান। তার এই সফর বরিশালের রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন তোলে। মঈন কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক হওয়ায়, তার উপস্থিতি বরিশালে বিশেষ আলোচনার জন্ম দেয়।

এই ঘটনাগুলো বরিশালের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যা শুধু হাসানাতের দীর্ঘ শাসনের অবসান হয়, বরিশাল অঞ্চলের রাজনৈতিক আধিপত্যেরও নাটকীয় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com