যশোর জেলার পোর্টথানাধীন বেনাপোল-যশোর মহাসড়ক সংলগ্ন পৌরগেট আমড়াখালীর কাগমারী গ্রামে রেললাইনের পার্শ্ববর্তী এলাকার ফতেমা খাতুন(২৭) নামের এক গৃহবধূ খুন হয়েছে।
সোমবার বিকালে এ সংবাদ পাওয়া যায়। শশুর বাড়ীর নিজ গৃহে স্বামী, শশুর-শাশুড়ী এবং দেবর ও পরিবারের অন্যান্য সদস্য কর্তৃক গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশ। বাড়ীর সকল সদস্য পলাতক রয়েছে। ঘটনাস্থল ঘুরে জানা যায়, গৃহবধূ ফতেমা বেগম বেনাপোল পোর্টথানাধীন পোড়াবাড়ী নারায়ণপুর গ্রামের,তার শাহাবুদ্দিনের মেয়ে । ২০২০ সালে একই থানার আমড়াখালীর কাগমারী গ্রামের বাসিন্দা সালাহউদ্দিনের সাথে বিয়ে হয়। সালাহউদ্দিন পেশায় একজন ট্রাক ড্রাইভার। বিয়ের পর থেকে যৌতুক লোভী স্বামী,শশুর-শাশুড়ী এবং ফাতেমার দেবর সহ অন্যান্য বাড়ীর সদস্যরা যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে আসছিল। ফাতেমার গরীব অসহায় পিতা নিজের সর্বস্ব বিক্রি করে ৪-৫ লাখ টাকা দিয়ে জামাই সালাহউদ্দিন কে একটি কাভার্ডভ্যান কিনে দেয়। যৌতুক পিয়াসী সালাহউদ্দিন এতে থেমে থাকেনি,আরও যৌতুক পাওয়ার আসায় সে তার স্ত্রীকে প্রায়সই মারধর করে। এ নিয়ে ফাতেমার শশুর বাড়ী এলাকায় বেশ কয়েকবার শালিশ-বিচারের মাধ্যমে খুনী,লম্পট,নারীলোভী সালাহউদ্দিন কে সতর্ক করা হলেও সে থেমে থাকেনি। যৌতুক না পেয়ে ফাতেমার উপর নির্যাতন,অত্যাচার করতে থাকে বাড়ীর অন্যান্য সদস্যরা।
আরও জানা যায় সোমবার ঘটনার দিন দুপুর পৌনে ২টার দিকে মৃত ফাতেমার সাথে স্বামী সালাহউদ্দিন এর বাক-বিতন্ডা হয়,এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সহায়তায় মারধর এবং গুরুতর শারিরীক নির্যাতন শেষে ফাতেমাকে ঘরে নিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখে এবং মৃত্যু নিশ্চিত জেনে ফাতেমার শশুর-জুলহাস, শাশুড়ী-ছালেহার,দেবর-সালমান হোসেন ও তার স্ত্রী সহ অন্যান্য হত্যাকারীরা বাড়ীর ২টি গরু,বেশ কয়েকটি ছাগল এবং ঘরের যাবতীয় মূল্যবাণ জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যায়,এখন পর্যন্ত বাড়ীর সকল সদস্য পলাতক রয়েছে। খবর পেয়ে বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌছে এবং লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এদিকে,ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন পুলিশের নাভারণ সার্কেলের এ এসপি-নিশাত আল নাহিয়ান এবং বেনাপোল পোর্টথানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ(ওসি) সুমন ভক্ত। তাৎক্ষনিক ঘটনা সম্পর্কে তারা বলেছেন-“হত্যাকান্ডটি সকলকে মর্মাহত করেছে,হত্যাকান্ডের মুলে জড়িত হত্যাকারীরা পলাতক রয়েছে,তাদেরকে ধরতে পুলিশের গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে,যত দ্রুত সম্ভব হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। ময়না তদন্তের জন্য লাশটি যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে বলে জানায়।
এ সময় আইন শৃঙ্খলার কাজে সহায়তা করেন-লিখন কুমার সরকার(এস,আই),শংকর কুমার বিশ্বাস(এস,আই), রাজু আহম্মেদ(এস,আই) এবং নারী পুলিশ সহ থানার অন্যান্য পুলিশ কনেস্টবলগণ।