দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার হরিমাপুর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ রফিকুল ইসলাম ওরফে রিজু মাষ্টার মোঃ আশেক উল্লাহ্র জমিতে লাগানো ৫লক্ষ টাকার গাছ কর্তন এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন। গতকাল শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় পার্বতীপুর উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের বারোঘরিয়া মিল চাতাল চত্বরে নির্যতিত নিপীড়িত ভূক্তভোগী পরিবারের পক্ষে মোঃ আশেক উল্লাহ্ সংবাদ সম্মেলন করেন এবং তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠ কালে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির রাজনীতির সাথে অতপ্রতভাবে জড়িত। আমি ১০নং হরিরামপুর ইউনিয়ন বিএনপিকে সু- সংগঠিত করার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে দলের পক্ষে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু বিগত বছরে ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগ সরকারের সময় থেকে অদ্যবধি অন্তর্র্বতী সরকারের সময়েও আমিও আমার পরিবারের সদস্যরা এলাকার চিহ্নিত আওয়ামী সন্ত্রাসী ও ভুমিদস্যুদের দ্বারায় নানাভাবে নির্যাতিত ও নীপিড়িত হয়ে অনেক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। তারা শুধু আমাদের নামে ষড়যন্ত্রমুলক মামলা করেই ক্ষান্ত হয়নি উপরোন্ত প্রকাশ্যে দিবালোকে আমাদের ২০বছরের ফলদ ও বনজ বাগানের ৫লক্ষাধিক টাকার মুল্যবান গাছপালা কেটে নিয়ে গেছে। ঘটনারদিন (১৮নভেম্বর-২০২৪) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তারা আমার নিজ বাগানের গাছপালা কর্তন করে নিয়ে যায়। যা কিনা আমাদের দুই ভাইয়ের দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের ফসল ছিল। গাছ কর্তনের সময় আমি পার্বতীপুর উপজেলা বিএনপির নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেন ভাইকে বিষয়টি ফোনে জানালে তার মাধ্যমে আমি পার্বতীপুর থানা পুলিশের যথেষ্ট সহযোগীতা পেয়েছি। এই বিষয়টি সম্পর্কে মধ্যপাড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পুলিশ সদস্যরাও অবগত আছেন। তাদের কাছে সন্ত্রাসীদের গাছ কর্তনের ভিডিও রয়েছে। এখানে বলতে হয়, এই সব কিছুর মুলে রয়েছেন ১০নং হরিরামপুর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতিা শাহপাড়া গ্রামের মৃত এরশাদ আলীর ছেলে মোঃ রফিকুল ইসলাম ওরফে বিজু মাষ্টার ও উত্তরা নয়াপাড়া গ্রামের অধিবাসী মোফাজ্জল হোসেন প্রামানিকের ছেলে মোঃ হবিবর রহমান। এই হবিবর আবার কখনো উকিল, কখনোবা মহুরী, আবার কখনো আদালতের জজ সাহেবের ঘনিষ্ট আত্মীয় পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা করে থাকেন। তারা নিজ স্বার্থে যে কোন অন্যায় কাজ করতে একটুও দ্বিধাবোধ করেন না। তারা দীর্ঘদিন ধরে খাস জমি দখল, বনভুমি দখল সহ গরীব ও অসহায় মানুষের সম্পত্তি আত্মসাৎ করে তারা এখন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ ও কলাগাছ ফুলে বটগাছ হয়েছেন। এমনকি তারা পার্বতীপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম প্রামানিকের ঘনিষ্ট আত্মীয় স্বজন হওয়ার সুবাদে তৎকালিন সময়ে এলাকায় যা খুশি তাই করে আসছেন। শুধু তাই নয়, তারা অন্তর্র্বতীকালিন সরকারের আমলেও কতিপয় বিএনপির লোকজনের সাথে আতাত করে এখনো আগের মত ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই অঞ্চলের ৯৫ভাগ মানুষ তাদের কাছে জিম্মি হয়ে রয়েছে। তাই তারা যতবড় অন্যায় অত্যাচার করুক না কেন তাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস কারোর নেই। অথচ, আমি প্রত্যক্ষভাবে বিএনপি করার অপরাধে দীর্ঘদিন ধরে তাদের অন্যায় অত্যাচার ও হয়রানীর শিকার হয়ে আসছি। এমনকি তাদের বৈষম্য আচরণ থেকে রক্ষা পায়নি আমার কোমলমতি মেয়েও। সে সময় আওয়ামীলীগ নেতা বিজু মাষ্টার দলাইকোটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক থাকাকালিন তিনি আমার মেয়েকে হিংসাত্মকমুলক ভাবে তার বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে দেননি। তাই নিরুপায় হয়ে আমার মেয়ে আমার গ্রাম থেকে বেশ কিছু দুরে খয়েরপুকুরহাট এলাকার একটি বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পড়ালেখা করেছে। তবুও আমি আমার এই আক্ষেপ কারো কাছে প্রকাশ করতে পারিনি। কারণ তাদের বিপক্ষে কোন কথা বলতে গেলেই আমাকে হতে হয় দাঙ্গা হাঙ্গামার শিকার, নতুবা কোন ষড়যন্ত্রমুলক মামলার আসামী। তাদের লোকজনের দায়ের করা একাধিক মিথ্যা মামলার বোঝা কাধে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আদালত পাড়ায় পাগলের মত ঘুরছি। এছাড়ও তারা বিভিন্ন সময়ে আমার বসতবাড়ীতে হামলা চালিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে। আওয়ামীলীগ নেতা বিজু মাষ্টার ও মোফাজ্জলের ছেলে হবিবার রহমানের লেলিয়ে দেওয়া লোকজন প্রায় সময় আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে রাস্তা ঘাটে আটক করে মারডাং করেছে। তাদের মারপিটের শিকার হয়ে আমার এখন স্মৃতি শক্তি লোপ পেয়েছে। কারণ তারা বেশিরভাগ সময় আমার মাথায় মারডাং করেছে। শুধু তাই নয়, তারা এখন আমার পর টার্গেট করেছে আমার চাকরিজীবি ছেলেকে। তারা বিভিন্ন জায়গায় হুমকী দিয়ে বেড়াচ্ছে, যে কোন সময় তারা আমার ছেলেকে নাগালে পেলে হত্যা করে লাশ গুম করবে। তাই আমিও আমার পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে আওয়ামী সন্ত্রাসী বিজু মাষ্টার, মোফাজ্জল হোসেনের লেলিয়ে দেওয়া ছেলে হবিবর ও তাদের গুন্ডা বাহিনীর ভয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তারা আমাদেরকে প্রতিনিয়ত প্রাণ নাশের হুমকী দিয়ে যাচ্ছে।তিনি আর বলেন, ১০নং হরিরামপুর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ নেতা বিজু মাষ্টার, মোফাজ্জল হোসেন তাদেও সমর্থিত লোকজন এখন নিজেদেরকে বিএনপির লোক পরিচয় দিয়ে একদিকে নিচ্ছে সুযোগ সুবিধা আর অন্যদিকে এলাকার সাধারণ মানুষের উপর চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন অন্যায় অত্যাচার। কিন্তু তারা কখনো বিএনপি ছিলনা তারা হচ্ছেন সমাজের সুবিধাবাদী। শুধু নিজ স্বার্থ হাছিলের জন্য বর্তমান সময়ে তারা কথিত বিএনপির নেতাদেও ছাতার নিচে আশ্রয় নিয়ে আগের মতই এলাকায় অরাজকতা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা গত ৪ঠা অক্টোবর-২০২৪ ইং তারিখে দিনাজপুর কোতয়ালী থানায় আমাদের বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্রমুলক মামলা দায়ের করেন। গত ১৮নভেম্বর-২৪ ইং তারিখে ওই মামলার ধার্য্য তারিখ ছিল। আমার পরিবারের লোকজন সবাই আমরা আদালতে উপস্থিত ছিলাম। এই সুযোগে মামলার বাদী, স্বাক্ষী ও এলাকার স্বঘোষিত বিএনপি নেতা মানিকসহ শতাধিক লোকজন আমার আম বাগান ও ইউক্যালিপ্টাসের বাগানের প্রায় ৫লক্ষাধিক টাকার গাছ কেটে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে আমার ছোট বোন মোছাঃ দৌলা খাতুন, ভাতিজি লায়লা বানু ও আমার জামাই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গাছ কাটার কারণ জানতে চাইলে প্রতিপক্ষ মশিউর রহমান, দিলা, মইনুল ইসলাম, তহুরা খাতুন, মানিক মিয়া, হবিবর রহমান, হাফিজুল ইসলাম, ফেরদৌস আলী, অহিদুল ইসলাম, আপেল মাহমুদ ও কমলা বানু সকলে মিলে আমার লোকজনকে মারপিট করে গাছের সাথে বেঁধে রাখে। এসময় তারা মেয়েদের পড়নের জামা কাপড় টেনে হিঁচড়ে ছিড়ে ফেলে শ্লীলতাহানি ঘটায়। আমি আরও বলতে চাই, তফশীল বর্ণিত জমাজমি নিয়ে দিনাজপুর আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। সদর সিনিয়র জজ আদালত মামলা নং-২৯৭/১০অন্য। এই নিম্ন তফশিল বর্ণিত সম্পত্তি সহ আমাদের বাবা জীবিত থাকাকালিন আরো অন্যান্য সম্পত্তি সহ ১৯৬৭সালে আমাদের দুই ভাইয়ের নামে প্রায় ১৪একর সম্পত্তি হেবাবিল এওয়াজ দলিল সম্পাদন করে দেন। তখন থেকে আমরা দুই ভাই উক্ত ৫৭৩৪ দাগে ও ৫৭৩৯ দাগে হাড়িভাংগা আম গাছ, ইউক্যাল্টিাসের গাছ লাগাই, ও অন্যান্য দাগের জমিতে বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করাসহ ভোগদখল করে আসছি।আমি আওয়ামীলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম বিজু মাষ্টার, হবিবর রহমান সহ তার লেলিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসী দোসরদের বিচারের দাবী করছি। বর্তমানে আমি আমার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।