প্রভাতের শিশির ভেজা ঘাস আর ঘন কুয়াশার চাদরে ভেজা হেমন্তের শেষে শীতের আগমনের বার্তা জানিয়ে দিচ্ছে শীত শুরু হয়ে গেছে। শীতের আমেজ শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার গাছিরা।উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে খেজুর গাছ থেকে গাছিদের রস সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। নভেম্বরের শেষ কিংবা ডিসেম্বরের শুরুতে মেলে মনমাতানো খেজুরের রস। এই রস সংগ্রহের জন্য ইতোমধ্যেই অধিকাংশ গাছ তৈরি করা হয়েছে। অনেক গাছ থেকে শুরু হয়েছে রস সংগ্রহও। ইতোমধ্যে এ বিষয়কে কেন্দ্র করে গ্রামাঞ্চলগুলোতে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ।কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় , উপজেলায় ৭৫ হেক্টর জমিতে খেজুর গাছের সংখ্যা প্রায় ১২ হাজার। এই শীত মৌসুমে সংগৃহীত খেজুরের রস থেকে ১২ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদনের প্রত্যাশা করছে কৃষি বিভাগ। এর ফলে চাঙা হয়ে উঠবে গ্রামীণ অর্থনীতি।দুর্গাপুর উপজেলার ক্ষিদ্র লক্ষ্মীপুর গ্রামের সাকির, পিতা: ফকির ও দুর্গাপুর উপজেলার আমগাছি গ্রামের গাছি শরিফুল ইসলাম বলেন, নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে মার্চের মাঝামাঝি তিন মাস আমরা গাছ থেকে রস সংগ্রহ করি। একেকজন গাছি প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫টি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে থাকেন। গাছ পরিচর্যা এবং রস সংগ্রহের জন্য গাছের মালিক আমাদের প্রতিদিন ৩০০ টাকা পারিশ্রমিক দেন।দুর্গাপুর উপজেলার ঝালুকা এলাকার চাষি আলেফ হোসেন বলেন, আমার প্রায় শতাধিক খেজুর গাছ রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধশতাধিক গাছ প্রস্তুত করে রস সংগ্রহ শুরু করা হয়েছে। বাকি গাছগুলোও ইতোমধ্যে প্রস্তুত সম্পন্ন করা হয়েছে। সেগুলোতেও দ্রুত সময়ের মধ্যেই রস সংগ্রহ শুরু করা হবে।তিনি বলেন, গত শীত মৌসুমে শতাধিক গাছের রস থেকে গুড় তৈরি করে প্রায় ৩ লাখ টাকা আয় হয়েছে। অথচ খেজুর গাছের পরিচর্যার জন্য ব্যয় করতে হয়নি। এছাড়া ৩০ জন মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। বাজারে গুড়ের দাম ভালো থাকলে এবারও ভালো টাকা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশা করছি। প্রতিনিধি দুর্গাপুর উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার ফরিদ হোসাইন জানান, দুর্গাপুরে প্রায় ১২ হাজার খেজুর গাছ। এর মধ্যে ঝালুকা ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি রয়েছে খেজুরগাছব।১ টি গাছ থেকে ৭-৮ কেজি গুড় উৎপাদন হয়। আর এই শীত মৌসুমে এসব গাছ থেকে ১০ মেক্ট্রিকটন গুড় উৎপাদনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। শীত মৌসুমে খেজুরের গুড়কে কেন্দ্র করে এ অঞ্চলের গাছিদের ব্যাপক কর্মযজ্ঞ শুরু হয়।