মানিকগঞ্জে আবাদি জমিতে পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসকের অনুমোদন ছাড়াই মহা সমারোহে চলছে ইট তৈরির কার্যক্রম। সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে একদিকে আবাদি জমি, বিদ্যালয় এবং অপর দিকে আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে এসব ইটভাটা।
সংশ্লিষ্টদের সঠিক দতারকি না থাকায় হুমকিতে পরেছে ফসলী জমি, বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশন এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের।
এসব ইট ভাটার অনেকেরই নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। ইটভাটা মালিকরা নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে এই অবৈধ ভাটা গুলো চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি ইট তৈরির মূল উপকরণ মাটি সংগ্রহে আবাদি জমির টপ সয়েল কাটার মহা উৎসব শুরু করেছে।
ভাটার পাশেই আবাদি জমির টপ সয়েল কেটে যেন পাহাড় গড়ে তুলেছে ভাটা ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও ইটভাটায় মাটি বহনকারী অতিভারী ট্রাক ব্যবহার করায় গ্রামীণ রাস্তাগুলোও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, হরিরামপুর উপজেলার বলড়া ইউনিয়নের সততা, স্বাধীন ও আমিন ব্রিকসে উৎসবমুখর পরিবেশে ইট তৈরি ও পোড়ানো হচ্ছে। কথা হয় সততা ব্রিকসের মালিক কুন্নু চেয়ারম্যানের সাথে। তিনি বলেন গতবছর কাগজপত্র পেতে হাইকোর্টে রিট করেছিলাম। পরিবেশের কাগজ আছে কিন্তু নবায়ন করা হয়নি। জেলা প্রশাসকের অনুমোদন নেই।
স্বাধীন ব্রিকসের মালিক শীতল চৌধুরী বলেন, আমরা ভ্যাট ট্যাক্স ঠিকই দেই কিন্তু তারপরও কাগজপত্র কেন পাইনা সেটা বলতে পারবোনা।
আমিন ব্রিকসের মালিক আল আমিন বলেন, আমরা এই ভাটা ভাড়ায় নেবার পর জানতে পারি এ ভাটার কাগজপত্র নেই।
সদর উপজেলার পুটাইল ইউনিয়নের লেমুবাড়ি এলাকার এমিকা ও একতা ব্রিকস্ এবং দিঘি ইউনিয়নের ঢাকা আরিচা মহাসড়কের পাশে, জামাল, রহমান, অসীম ও মালেকসহ ৬টি ভাটারই কাগজপত্র নবায়ন নেই। অবৈধ তালিকায় তাদের নাম থাকলেও পুরোদমে ইট প্রস্তুত করছে তারা।
রহমান ব্রিকসের মালিক রহমান জানান, কাগজপত্র বিষয়ে যা বলার পরিবেশ ও ডিসি অফিসে বলবো। সাংবাদিকদের সাথে এ বিষয়ে কোন কথা বলবো না। জামাল ও মালেক ব্রিকসের স্বত্বাধিকারীরা জানান, কাগজপত্র পেতে আবেদন করা হয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস বলেন, ভাটা চালাতে একাধিক প্রতিষ্ঠানের ছারপত্রের প্রয়োজন হয়। এ ছারপত্র পেতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের কারনে প্রক্রিয়াটা দীর্ঘ হয়। এজন্য ব্যবসায়ীরা অনেক সময় আইনের তোয়াক্কা না করেই কার্যক্রম শুরু করেন। আমি আশা করব সংশ্লিষ্টরা দ্রুত সময়ে প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র প্রস্তুত করে দেবেন। সেই সাথে ব্যবসায়ীরাও যেন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হন।
পরিবেশ অধিদপ্তর মানিকগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ পরিচালক, ড. ইউসুফ আলী বলেন, আমরা ১৫টি অবৈধ ইটভাটার তালিকা করেছি। কাগজপত্র ছাড়া ইটভাটার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার জানান, আইনের ব্যত্যয় করে কেউ কিছু করতে পারবেনা। যদি অনুমোদন ছাড়া কেউ কার্যক্রম শুরু করে তাহলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।