নাটোরে মুক্তিপণ না পেয়ে অপহৃত এক স্কুলছাত্রকে হত্যার দায়ে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। এ ছাড়া লাশ গুমের দায়ে আরও তিন বছর তাঁকে কারাভোগ করতে হবে। একই অপরাধে অপর এক আসামিকে ১৩ বছর এবং আরেকজনকে ৩ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ আদেশ দেন।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার গাংগইল গ্রামের মো. রানা (৩৭), পশ্চিম সোনাপাতিল গ্রামের ফরহাদ হোসেন (২৯) ও ধনকয়া গ্রামের টিপু সুলতান (৩২)। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, নিহত কিশোরের নাম অনিক হোসেন (১৪)। সে নলডাঙ্গা উপজেলার ব্রহ্মপুর গ্রামের জফির উদ্দিন প্রামাণিকের নাতি। অনিক ২০১২ সালের ১৩ নভেম্বর বিকেলে তার মায়ের মুঠোফোন নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে আর সে বাড়িতে ফিরে আসেনি। পরে ওই ফোন দিয়ে অপহরণকারীরা মুক্তিপণ বাবদ পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন।বিষয়টি অনিকের নানা জফির উদ্দিন নলডাঙ্গা থানায় জানান। পুলিশ মুঠোফোনের তথ্য যাচাই করে কিছুদিন পর টিপু সুলতানকে গ্রেপ্তার করে। তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন এবং অপর আসামিদের পরিচয় প্রকাশ করেন।
নলডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক জহুরুল ইসলাম তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আসামি মো. রানা, ফরহাদ হোসেন ও টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। পরবর্তী সময়ে মামলাটি বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে আসে। আজ দুপুরে তাঁদের দণ্ড দেওয়া হয়।রায়ে মুক্তিপণ দাবি করার দায়ে আসামি রানাকে যাবজ্জীবন (৩০ বছর) কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন (৩০ বছর) কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া লাশ গুম করার দায়ে আরও তিন বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। একই অপরাধে ফরহাদ হোসেনকে অপহরণ ও মুক্তিপণ চাওয়ার দায়ে ১০ বছর, হত্যার দায়ে ১০ বছর ও লাশ গুমের অপরাধে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। অপর আসামি টিপু সুলতানকে লাশ গুম করার দায়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।
ট্রাইব্যুনালের সেরেস্তাদার শামীম আহম্মেদ রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রায় ঘোষণার পর আসামিদের নাটোর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।