টাঙ্গাইলে এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৯১ জন। জেলায় ২০২৩ সালে বিভিন্ন স্থানে ৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ৯১ জন নিহত ও ৮৪ জন আহত হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) রাকিবুল হাসান রাসেল। অপরদিকে সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে সড়ক আইন মেনে চলার জন্য সচেতনতামূলক সেমিনার করার দাবি জানান গাড়ি চালকরা।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের জানুযারি মাসে ৫টি দুর্ঘনায় চারজন নিহত দুজন আহত, ফেব্রুয়ারি মাসে ৭টি দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত ১ জন আহত, মার্চ মাসে ৫ দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত ৩ জন আহত, এপ্রিল মাসে ৩ দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত, মে মাসে ৭ দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত ৫ জন আহত, জুন মাসে ১২ দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ১০ জন আহত, জুলাই মাসে ১৪ দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত ২২ জন আহত, আগস্ট মাসে ১৪ দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত ৪ জন আহত, সেপ্টেম্বর মাসে ১০ দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত ১২ জন আহত। অক্টোবর মাসে ৪ দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত ২ জন আহত, নভেম্বর মাসে ৬ দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত ৪ জন আহত এবং ডিসেম্বর মাসে ১২ দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত ও ১৯ জন আহত হয়েছেন।
নিরাপদ সড়ক চাই টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বড় মনি বলেন, অল্প দক্ষ বা অদক্ষ চালক দিয়ে গাড়ি চালানোই সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ। এ ছাড়াও মোটরসাইকেল চালকরা বেপরোয়া গাড়ি চালাতে গিয়ে প্রাণহানি না হয় সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে সংগঠনের পক্ষ থেকে সচেতনতা সেমিনার করা হয়। একটা পরিবার সবসময়ই চায় আপনি এবং আপনার গাড়ি দুটোই ভালো থাকুক ও নিরাপদে থাকুক।
গাড়ি চালকরা অভিযোগ করেন, উঠতি বয়সের ছেলেরা মোটরসাইকেল নিয়ে যখন বের হয় তখন তারা অতিরিক্ত গতিতে চালায়। এ ছাড়াও তারা রাস্তায় প্রতিযোগিতা করে। তাই বিশেষ করে মোটরসাইকেল চালকদের জনসচেনতার জন্য সেমিনার করা প্রয়োজন। এবছর যত দুর্ঘটনা ঘটেছে এর মধ্যে মোটরসাইকেল চালকদের সংখ্যাই বেশি।বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) টাঙ্গাইলের সহকারী পরিচালক শেখ মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, সড়কে চলতে হলে সড়কের আইন মেনে গাড়ি চালাতে হবে। এ ছাড়াও নিরাপদ ড্রাইভিংয়ের জন্য যা সবচেয়ে বড় প্রয়োজন সেটি হলো মনোযোগ। যখনই গাড়ি চালানো হয় তখন খেয়াল রাখা উচিত মনোযোগ যেন গাড়ি এবং রাস্তার দিকেই থাকে। কখনই গাড়ি এবং রাস্তা থেকে মনোযোগ সরানো উচিত না। একটু অমনোযোগী ড্রাইভিংয়ের কারণে ঘটতে পারে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। এটি মাথায় রেখে গাড়ি চালালে দুর্ঘটনা কমে যাবে বলে আশাবাদী।
এবিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) রাকিবুল হাসান রাসেল বলেন, অনেক সময় প্রতিযোগিতা করে অনেক ড্রাইভার গাড়ি চালিয়ে থাকেন। এটি সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। তাই ঠান্ডা মাথায় গাড়ি চালানো আর মনে রাখা উচিতো আপনি গাড়ি চালানোর প্রতিযোগিতায় নামেননি, নিরাপদে নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে গাড়ি চালাচ্ছেন। তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশই কমে যাবে বলে মনে করি।তিনি আরও বলেন, চালানোর সময় কখনই হুটহাট করে গাড়ির গতিসীমা বাড়াবেন বা কমাবেন না। হুটহাট গাড়ির গতি বাড়ানো বা কমানো বড় দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই যতদূর সম্ভব এই বিষয়টি মেনে গাড়ি চালানোর চেষ্টা করা উচিত।