চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে আঞ্চলিক রাস্তা পাঁকাকরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের নামোটিকোরী জামে মসজিদ থেকে গোঁয়াবাড়ি চাঁদপুর পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা কাঁচা থেকে পাঁকাকরণ (কার্পেটিং)’র কাজ শুরু হয়েছে। চলমান কাজে অনিয়মের অভিযোগ এনে স্থানীয়রা কাজে বাধা দেয়। এই রাস্তার কাজটি করছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স মুক্তার আলী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, নামোটিকোরী থেকে গোঁয়াবাড়ি চাঁদপুর পর্যন্ত রাস্তা কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু হওয়ায় আমরা অত্যন্ত খুশি। এতে আমাদের যাতায়াতের অনেক সুবিধা হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন ফসলী জমি থেকে সফল সহজে ঘরে তোলা যাবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় রাস্তা কাজ শুরু হতে না হতে অনিয়ম করতে লেগেছে। এই রাস্তা বেশিদিন টিকবে না। তাই এলাকার স্বার্থে আমরা এলাকাবাসি বাধা দিয়েছি যেনো সঠিক নিয়ম মেনে সব কাজ ঠিকভাবে করে।
সরমজিনে দেখা গেছে, রাস্তা নির্মানের অন্যতম উপকরণ ভরাট বালির স্থানে ব্যবহার করা হচ্ছে মাটি। যা কার্পেটিং রাস্তার জন্য ক্ষতিকর। আর মাটি দিয়ে ভরাট করলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বেশি লাভবান হবে বলেও জানান স্থানীয়রা।
এদিকে, স্থানীয় মো. সদরুল ইসলাম, কবিরুল ইসলাম, তৌফিক, আজিজুল ইসলাম, মাসুদ রানা, জামাল, সাইফুল ইসলাম, সাহেব আলী, বাদল, আব্দুল হাকিম, মনিমুল হক ও সফিকুল ইসলামসহ আরো অনেকে বলেন, রাস্তার মানুষের জীবনের জন্য অপরিহার্য, রাস্তা ছাড়া কেউ চলাচল করতে পারবে না। আমাদের এই নামোটিকোরী থেকে গে^ায়াবাড়ি চাঁদপুর পর্যন্ত যে রাস্তাটি হচ্ছে তা দীর্য়দিন পর পেয়েছি। আগে মানুষ কাঁদার জন্য পায়ে হেটে চলতে পারতো না। আমার এই রাস্তাটি পাঁকা করা হচ্ছে আজ। শুধু পাঁকা করলেই হবে না, তা কতদিন স্থায়ী হবে সেটাও দেখতে হবে। কিন্তু আমাদের চোখের সামনে যে অনিয়ম দেখছি তাতে রাস্তাটি নামেই শুধু কার্পেটিং হবে। হয়তো নতুন রাস্তা কিছুদিন নতুন হয়ে থাকবে। আর কিছুদিন বাদে রাস্তা উচুনীচু এবং পিচ-পাথর উঠে আগের মতোই হযে যাবে।
স্থানীয়রা আরো বলেন, রাস্তার কাজ শুরু হতে না হতেই অনিয়ম শুরু হয়েছে। রাস্তাটি প্রবেশদ্বারে দু’পাশ কমিয়ে দিয়েছে। আর ভরাট হিসেবে ব্যবহার করছে এক তৃতীয়াংশ মাটি-বালি। কাজের শুরুতেই যখন অনিয়ম, তখন কাজ পুরো করতে কত না অনিয়ম হকে কে জানে?। তাই আমাদের রাস্তাটি সঠিক নিয়মে যেনো হয় সে জন্য আমার এলাকাবাসি বাধা দিয়েছি। যতক্ষণ এর সমাধান না হতে ততক্ষণ কোন কাজ করতে দেবো না আমরা।
এব্যাপারে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. মুক্তার আলী জানান, আমার এই কাজটি ২০১৮ সালের বরাদ্দ। কোন কারণে আমরা কাজটি সময় মতো করতে পারিনি। আমরা কখনো চাইবো যে রাস্তার কাজ অনিয়ম হোক। আমরা সঠিকভাবে, সঠিক নিয়ম মেনে কাজ করছি। আর যে ভরাটের জন্য এলাকাবাসি বাধা দিয়েছে তা ভুল করে ২/৩ গাড়ি চলে এসেছে। আমরা তা ফেরত পাঠাচ্ছি।
এদিকে, শিবগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলী মো. ছাবের আলী জানান, আমি ৫দিন থেকে ট্রেনিংয়ে আছি। নামোটিকোরী থেকে গোঁয়াবাড়ি চাঁদপুর পর্যন্ত রাস্তা কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে। তবে, কাজে অনিয়ম হচ্ছে তা আমার জানা নাই। এই রাস্তাটি উচুনীচু হওয়ার জন্য কোন কোন স্থানে মাটি ভরাট করার পর নিয়মানুযায়ী ভরাট বালি দিতে হতে। এছাড়া নিয়মানুযায়ী ভরাট বালি ব্যবহার করতে হবে। যদি রাস্তায় সম্পূর্ণ মাটি ব্যবহার করে তাহলে রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিন। পরবর্তী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কোন কাজ হবে না। রাস্তার কাজের ব্যাপারে আমি চুল পরিমাণ ছাড় দেবো না।