1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ১২:৫২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কবিতা – দাও না নিমন্ত্রণ গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে কলাপাড়ায় গ্রাফিতি প্রতিযোগিতা রক্তাক্ত জুলাই গ্রাফিতি প্রতিযোগিতা ও চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতায় ঈদগাঁওয়ে মাধ্যমিক পর্যায়ে জব্বারিয়া দাখিল মাদ্রাসা প্রথম আতা উল্লাহ খানের ৫৪ তম জন্মদিন ফুলবাড়ীতে জামাত ইসলামের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত রিক্সা প্রতীকে শৈলকুপা থেকে আসাদুজ্জামান (লাল) মনোনীত রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ালেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর রঞ্জু মিয়া, লাইভে এসে দেশবাসীর কাছে চাইলেন ক্ষমা গোপালগঞ্জের ঘটনার প্রতিবাদে বাসাইলে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ‎তা’মীরুল মিল্লাত টঙ্গীর রাজপথে ‘জুলাই দ্রোহ’: ফ্যাসিবাদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল রাণীশংকৈলে জমির ফসল কেটে ফেলার অ’ভি’যো’গ

মাটি ব্যবসা ও মাদককারবারীর সঙ্গে দ্বন্দ্বে খুন হয় কৃষকদল নেতা নাছির, ছিনিয়ে নেয়া হয় ২ লাখ টাকা

মুহাম্মদ নাজিমুজ্জামান রাশেদ
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২৯ মার্চ, ২০২৫
  • ১০৬ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মাটি ও স্ক্রাপ লোহার ব্যবসার দ্বন্দ্বেই খুন হয়েছেন উপজেলা কৃষকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাছির উদ্দীন। খুনের আগে নাছির ও হত্যাকারীদের সাথে একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। ওই বৈঠকে নাছির হত্যাকারীদেরকে ২ লাখ টাকা বুঝিয়ে দেওয়ার কথাবার্তা আগেই হয়েছিল। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বিকালে তার পরিবারের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। নিহত নাছির উদ্দীন বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের হাতিলোটা গ্রামের মৃত কবির আহম্মদের ছেলে। তার একাধিক গরু ও মুরগির খামার রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তিনি মাটি কাটা ও স্ক্রাপ লোহার ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নিহত কৃষকদের নেতা নাসির উদ্দিন এর বাড়িতে শোকের ছায়া বইছে। তার বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি মাঠে জানাযার নামাজের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। তার দুই কন্যা বসে বাবাকে হারিয়ে বিলাপ করছেন। আর স্ত্রী ঘরের ভেতরেই অবচেতন অবস্থায় রয়েছেন। একমাত্র ছেলেটিও শারীরিক প্রতিবন্ধী, বাবাকে হারিয়ে সেও বাকরুদ্ধ। নাসির উদ্দিনের স্ত্রী মোমেনা আক্তার বলেন, গতকাল বুধবার নাসির উদ্দিনের সঙ্গে একটি পক্ষের বৈঠক ছিল। বৈঠকের আগেই তাদের সঙ্গে দুই লাখ টাকার বোঝাপড়া হয়। বুধবার ইফতারের পর তিনি দুই লক্ষ টাকা নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে ঘর থেকে বের হন। এক লক্ষ টাকা নিজের পকেটে ছিল, আরেক লক্ষটাকা তার ছেলের পকেটে ছিল। তিনি আরো বলেন পথে মুখোশধারী সন্ত্রাসী নাসির উদ্দিনকে ঘিরে ধরেন। এ সময় তারা তার ছেলেকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে একটি লজেন্স হাতে দিয়ে বলেন, তুমি চলে যাও। তোমার মাকে ডেকে আন। বাড়িতে এসে ছেলে মাকে বলেন, মা আমার বাবাকে কয়েকজন ধরে ফেলেছে, তাদের হাতে অনেক লম্বা একটি ছুরি। ওরা বাবাকে মারবে। মুহূর্তে আমার কলিজা ধরপড় করে উঠলো। নাসির উদ্দিনরা নয় ভাই। তার ভাইয়েরা তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে যেতেই দেখেন নাসিরের নিথর দেহ সড়কে পড়ে রয়েছে। শুধু তাই নয় নাসির উদ্দিনকে নিশংসভাবে শরীর থেকে মাথা আলাদা করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন স্থানীয় নুরুল আবছার ও জামাল হুজুরের ছেলে আজাদ মো. নাসির উদ্দিনের সঙ্গে মাটি ব্যবসার অংশীদার ছিলেন। তাদেরকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেই তারা বিস্তারিত বলতে পারবেন কিভাবে, কি কারণে কারা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। নাসির উদ্দিনের ফুফাতো বোন রিজিয়া বেগম জানান, মাটি ব্যবসার দ্বন্দ্বেই তার ভাই খুন হয়েছেন। যারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। নাম প্রকাশন অনিচ্ছুক নাসিরুদ্দিনের এক তালতো বোন জানান, সবার ঘরে ঈদের আনন্দ আর নাসির উদ্দিনের ঘরে কেবলই শোক। এমন একটি ঈদের আগে, রমজানের দিনে যারা তাকে এতো নৃশংসভাবে হত্যা করেছে তাদের জন্য ফাঁসি হয়। তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নিহত নাছিরের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। হত্যার শিকার হওয়ার দিন একজন তরমুজ ব্যবসায়ীকে পেটানোর অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও বেশ কয়েকজনের কাছ টাকা হাতিয়ে নেওয়া, মারধর, চাঁদাবাজির অভিযোগও পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। আরও জানা গেছে, শীর্ষ মাদককারবারীদের সাথে নাছিরের বিরোধ চলছিল। হাতিলোটা এলাকায় মাদকের সাম্রাজ্যে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করোন স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা। এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে নামাজে জানাজা শেষে নাসির উদ্দিনকে হাতিলোটার স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব, ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা লায়ন আসলাম চৌধুরী। এসময় তিনি প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, যারা নাসির উদ্দিনকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে তারা যে দলেরই হোক, এমনকি তারা যদি আমার দলেরও হয় তাদেরকে গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তিনি আরো বলেন, এটি নিঃসন্দেহে একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। নামাজে জানাযায় আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য জহুরুল আলম জহুর, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. কমল কদর, সদস্য সচিব মোঃ মহিউদ্দিনসহ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল কৃষকদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েক হাজার নেতাকর্মী। জানা গেছে, ২৪ ঘন্টা পার হলেও পুলিশ এখনও নাছির হত্যার কোন ক্লু বের করতে পারেনি। তবে মাদককারবারীদের কয়েকজনের সাথে তার বিরোধ চলছিল বলে জানতে পারে পুলিশ। নাছিরকে ৩ টি বড় আকারের কোপ দিয়ে হত্যা করা হয়েছে এবং শেষে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য জবাইও করা হয়েছে বলে জানা যায়। জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড থানার ওসি মো. মজিবুর রহমান বলেন, এখনও কোন মামলা হয়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে মামলা করবেন। আমরা আসামিদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছি।

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com