বরগুনার বেতাগী পৌর শহরের কাঁচা বাজার অবশেষে পেলো একটি স্থায়ী ঠিকানা। দীর্ঘদিনের ভোগান্তি, অভিযোগ ও দাবির পর স্থানীয় প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপে বাজারটি স্থানান্তরিত হয়েছে নির্ধারিত স্থানে। ৯ এপ্রিল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিপুল শিকদারের নেতৃত্বে পরিচালিত এক অভিযানে অস্থায়ী কাঁচা বাজার উচ্ছেদ করা হয় এবং একই দিন বিকেলে তা স্থায়ী বাজারে স্থানান্তর করা হয়। এর আগে বেতাগী টাউন ব্রিজ ও ব্রিজের ঢালে কাঁচা বাজারটি বসতো। বিশেষ করে হাট-বাজারের দিনে এই এলাকা পরিণত হতো বিশৃঙ্খল এক পরিবেশে। বাজারের কারণে মূল সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হতো, পথচারীরা চলাচল করতে পারতো না। স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থার অবসান চেয়ে বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ ও মানববন্ধন করেছে। অভিযানের দিন সকাল থেকেই প্রশাসনের উপস্থিতিতে বাজার উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়। প্রায় তিন থেকে চার ঘণ্টা ধরে চলা প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষে অস্থায়ী দোকানগুলোকে নতুন নির্ধারিত স্থানে স্থানান্তর করা হয়। প্রশাসনের এমন উদ্যোগে খুশি ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। কাঁচা বাজার সমিতির সভাপতি আলী এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “এটা আমাদের জন্য অনেক বড় আনন্দের বিষয়। এতদিন ধরে আমরা ব্রিজের ঢালে অস্থায়ীভাবে বসতাম। বৃষ্টিতে ভিজতাম, রোদে পুড়তাম, নিরাপত্তাও ছিল না। এখন আমরা স্থায়ীভাবে ব্যবসা করতে পারছি।” বাজারে আসা একজন ক্রেতা বলেন, “বাজারের দিন রাস্তা দখল করে বাজার বসতো। বুঝতেই পারতাম না আমরা রাস্তায় চলছি নাকি বাজারের মধ্যে। যানজট তো লেগেই থাকত। এখন এই সমস্যা আর থাকবে না বলে মনে হচ্ছে।” এই স্থায়ী বাজার বাস্তবায়নের মাধ্যমে বেতাগী পৌরবাসীর দীর্ঘদিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি পূরণ হলো। শহরের যানজট ও জনভোগান্তি কমবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। একইসঙ্গে ব্যবসায়ীরাও একটি সুশৃঙ্খল পরিবেশে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালাতে পারবে, যা অর্থনীতির জন্যও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিপুল শিকদার বলেন, “কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ীদের এতদিন স্থায়ী কোনো ঠিকানা ছিল না। তারা বাধ্য হয়ে ব্রিজের ঢালে, রাস্তার পাশে অস্থায়ীভাবে বসতেন। এখন আমরা তাদের নির্ধারিত স্থানে স্থানান্তর করেছি। এটি প্রশাসনের কঠোর নির্দেশনার অংশ। যদি কেউ নিয়ম না মানে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।