প্রেমিকের সাথে অনৈতিক মেলা মেশায় ছয় মাসের গর্ভবতী হয়ে পরে এসএসসি পরীক্ষার্থী এক কিশোরী(১৬)। নিজের অপকর্ম ঢাকতে প্রেমিকার গর্ভের সন্তানকে হত্যা পরিকল্পনা করে প্রেমিক মেহেদী হাসানের পরিবার।পরে গোপনে ওই কিশোরীকে তুলে নিয়ে যায় মেহেদীর পরিবার। গত বৃহস্পতিবার ঐ কিশোরীকে নিয়ে ময়মনসিংহের একটি হাসপাতালে অচেতন করে গর্ভের সন্তানের গর্ভপাত ঘটিয়ে হত্যা করে মেহেদী হাসানের পরিবারের লোকজন । কিশোরীর মাকে নবজাতকের মুখটি না দেখিয়ে অজ্ঞাত স্থানে ওই শিশুর লাশ গুম করে অভিযুক্তরা। পরে অসুস্থ্য কিশোরীকে শনিবার (১২ এপ্রিল) রাত আটটার দিকে বাসায় পৌছে দেয় মেহেদীর বন্ধু রানা। ঘটনা প্রকাশ পেলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। শনিবার(১২ এপ্রিল) মধ্য রাতে ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে গোপনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তার মেয়ের সাথে অনৈতিক মেলামেশা করে অন্ত:স্বত্তা করে এবং পরে গর্ভে থাকা ছয়মাসের শিশু গর্ভপাত ঘটিয়ে হত্যা করে লাশ গুমের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তরা হলো, ওই কিশোরীর প্রেমিক উপজেলার কেওয়া দক্ষিণ খন্ড গ্রামের গাড়োপাড়া এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে মেহেদী হাসান(২১), মেহেদীর ভাই জয়(২৫),বাবা ইউসুফ আলী(৫৫),চাচা জুয়েল(৩৭),বন্ধু সবুজ(৩০), মেহেদীর চাচী ফুলবানু(৩০) ও রানা( ১৮)। অভিযুক্তরা একই গ্রামের বাসিন্দা। কিশোরীর সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে মেহেদী ফোন করে ভিকটিমকে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের গড়গড়িয়া মাষ্টার বাড়ি এলাকার রসের মিষ্টির দোকানের সামনে যেতে বলে। সেখানে গিয়ে অভিযুক্তদের দেখতে পায় সে। পরে অভিযুক্তরা তাকে গাড়িতে করে ময়মনসিংহে নিয়ে যায়। এসময় তারা কিশোরীর গর্ভের সন্তানের গর্ভপাত ঘটিয়ে হত্যা করতে বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরাঘুরি করে। পরে একটি হাসপাতালে তাকে নিয়ে যায়। তার পর সে কিছু বলতে পারেনি। জ্ঞান ফিরলে দেখে সে হাসপাতালে শুয়ে আছে। পেটে প্রচন্ড ব্যথা। তার গর্ভে সন্তান নেই। ওরা তাকে অচেতন করে গর্ভের ছয়মাসের সন্তানকে গর্ভপাত ঘটিয়ে হত্যা করেছে। সন্তানের মুখটিও দেখায়নি। শুনেছি ছেলে সন্তান ছিলো। দুই দিন হাসপাতালে রেখে শনিবার রাত আটটার দিকে মেহেদীর বন্ধু রানা তাকে বাসায় দিয়ে যায়। ঐ কিশোরী আরো জানায়, দুই বছর পূর্বে ভিকটিমের সাথে মেহেদীর পরিচয়। পরিচয় থেকে প্রেম। পরে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে গড়ে তুলে অনৈতিক সম্পর্ক। নিজ বাড়ি সহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ওই কিশোরীরা সাথে দৈহিক মিলন করতো মেহেদী। এক পর্যায়ে কিশোরী অন্ত:স্বত্তা হয়ে পড়ে। কিশোরী মেহেদীকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে তালবাহানা করতে থাকে। এরই মধ্যে ভিকটিমের গর্ভের সন্তানের বয়স দাড়ায় ছয় মাসে। কিশোরীর মা জানান, মেয়ে অন্ত:স্বত্তা হবার বিষয়টি জেনে মেহেদীর বাবা-ভাইকে জানাই। প্রভাবশালী মেহেদীর পরিবার বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। ছেলের অপকর্ম ঢাকতে ভিকটিমের গর্ভের সন্তান নষ্ট করার পরিকল্পনা করে। এক পর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে গোপনে মেয়েকে নিয়ে যায়। আমি কাজ শেষে বাসায় ফিরলে মেয়েকে দেখতে পাইনি। অনেক খুঁজে তার সন্ধান করতে পারিনি। তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ ছিলো। শনিবার রাত আটটার দিকে মেহেদীর বন্ধু রানা অসুস্থ্য মেয়েকে বাসায় দিয়ে যায়। তখন দেখি তার পেটে বাচ্চা নাই। মেয়ে জানায় মেহেদী ও তার পরিবারের লোকজন তাকে কৌশলে ময়মনসিংহের হাসপাতালে নিয়ে অচেতন করে গর্ভপাত ঘটিয়ে তার পেটের সন্তানকে হত্যা করেছে। লাশটিও না দেখিয়ে অজ্ঞাত স্থানে গুম করেছে। আমার মেয়ের চিকিৎসার কাগজ পর্যন্ত রেখে দিয়েছে। ছেলের অপকর্ম ঢাকতে মেহেদীর বাবা ইউসুফ আলী পরিকল্পিত ভাবে আমার মেয়ের গর্ভের সন্তানের গর্ভপাত ঘটিয়ে হত্যা করেছে। তার লাশটি ও গুম করেছে। আমি এর দৃষ্টান্ত মুলক বিচার চাই। বক্তব্য জানতে মেহেদীর বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। পুলিশ আতংকে বাড়ির অন্যরাও গাঁ ঢাকা দিয়েছে। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জয়নাল আবেদীন মন্ডল জানান, অভিযোগ পেয়েছি। মামলা হয়েছে। আসামী গ্রেফতার অভিযান চলছে।