সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে জমি ক্রয় ও বহুতল ভবন নির্মাণ, অথচ পদমর্যাদায় তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারী! তাদের প্রকৃত আয়ের উৎস কি? সিরাজগঞ্জ শহরের দরগা রোড এলাকায় পৌর ইমারত নির্মাণ আইন ও নীতিমালা লঙ্ঘন করে অনুমোদিত ৬ তলার স্থলে ৮ তলা ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের স্টেনোটাইপিস্ট খাদেমুল ইসলাম ও হিসাবরক্ষক হেদায়েত উল্লাহ গংয়ের বিরুদ্ধে। ভবনটি ‘এলিট টাওয়ার’ নামে পরিচিত হলেও এটি সম্পূর্ণভাবে নকশাবহির্ভূত ও আইনবহির্ভূত বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা **মোঃ আবু সুফিয়ান তালুকদার (সুফি)** গত কয়েক বছর ধরে এ বিষয়ে একাধিক লিখিত অভিযোগ করে আসছেন। সর্বশেষ অভিযোগ তিনি দায়ের করেন **৮ এপ্রিল ২০২৫** তারিখে, যা পৌর প্রশাসকসহ জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়, মাত্র ১১ শতাংশ জমিতে কোনো সেটব্যাক না রেখে (সামনে ৫ ফুট, পেছনে ৬ ফুট, চারদিকে ৪ ফুট ১ ইঞ্চি খালি জায়গা) সীমানা ঘেঁষে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে, যা আশপাশের বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। আজ **মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল)** দুপুর ১টায় অনলাইন পত্রিকা *দেশ বুলেটিন* ও *দৈনিক স্বাধীন দেশ* পত্রিকার সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি *মোঃ আবু সুফিয়ান তালুকদার* সরাসরি সাক্ষাৎ করেন সিরাজগঞ্জ পৌরসভার নগর পরিকল্পনাবিদ *মোঃ আনিসুর রহমান* এর সঙ্গে। সাক্ষাৎ শেষে তিনি জানান, *“অভিযোগটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। পৌর প্রশাসক বিষয়টি ইতোমধ্যেই অবগত হয়েছেন এবং দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।”* অভিযোগকারী আরও জানান, নির্মাণকালে বিভিন্ন উপকরণ (ইট, বালি, বাঁশ, পানি) তার বাড়ির ওপর পড়েছে, এতে পরিবার নিয়ে সেখানে বসবাস করা দুঃসহ হয়ে পড়ে। প্রতিবাদ করলে অভিযুক্তরা তাকে *গুম ও প্রাণনাশের হুমকি দেন* এমনকি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগও করেন তিনি। উল্লেখযোগ্য যে, **২০২২ সালের এপ্রিল মাসে** পৌরসভার নগর পরিকল্পনাবিদ মোঃ আনিসুর রহমান ভবনটি সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দেন। সেখানে ভবনটি **সেটব্যাক ও অনুমোদিত নকশা লঙ্ঘন করে নির্মিত** বলে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে, **৯ জুলাই ২০২৪** তারিখে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার তৎকালীন মেয়র ভবনের **অবৈধ ৮ তলা অংশ অপসারণের নির্দেশ দেন** এবং সাত কর্মদিবসের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য চূড়ান্ত নোটিশ জারি করেন। তবে অভিযোগ রয়েছে, এখনও পর্যন্ত ভবনের কোনো অংশ অপসারণ করা হয়নি। এলাকাবাসী অবৈধ ও নকশাবহির্ভূত এ ভবনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে পৌর প্রশাসনের দৃঢ় ভূমিকা আশা করছেন। তারা বলেন, ভবনটি অপসারণের পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে **দুর্নীতি দমন কমিশন** (দুদক) সহ সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হস্তক্ষেপ একান্ত প্রয়োজন।