পটুয়াখালীর মহিপুরে গৃহবধূ হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে কুয়াকাটায় মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন। শনিবার দুপুরের দিকে কুয়াকাটা প্রেসক্লাব সংলগ্ন মহাসড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা দোষীদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানান। গত ২০ মার্চ দুপুরে মাফিয়া তার ছোটবোন মারিয়া (১০) কে তার স্বামীর বাড়িতে যেতে বলেন। এ সময় মারিয়া তাদের বাড়িতে গিয়ে মাফিয়াকে ব্যাপক মারধর করছে দেখতে পেয়ে বাড়িতে এসে বলে দেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে মেহেদী তার শ্বশুর হারিছকে ফোন দিয়ে বলে মাফিয়া গলায় দড়ি দিয়েছে। পরে মা হাফিজা বেগম ও বাবা হারিছ তাদের বাড়িতে গিয়ে মাফিয়াকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কলাপাড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে মাফিয়ার পরিবার এটিকে হত্যা বললেও মেহেদীর পরিবারের দাবি মাফিয়া সবার অগোচরে ঘরের দোতলায় গিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০ মার্চ রাতে স্বামী মেহেদী হাসান (২৩) তার স্ত্রী মাফিয়া বেগম (১৭) কে গলা টিপে হত্যার করে এমন অভিযোগ করে মাফিয়ার পরিবার। মহিপুর থানার কুয়াকাটা পৌরসভার পাঞ্জপাড়া গ্রামের স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। মাফিয়ার মা হাফিজা বেগম ও ভাই বনি আমিনসহ তাদের পারিবারের সদস্যদের অভিযোগ, প্রায় ৪ মাস আগে পারবারিকভাবে একই গ্রামের মেহেদী হাসানের (২২) সঙ্গে মাফিয়ার (১৬) বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী মেহেদী যৌতুকের দাবিতে মাফিয়াকে নির্যাতন করে আসছেন।এ ঘটনায় নিহতের মা হাফিজা বেগম বাদী হয়ে ১ এপ্রিল মহিপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় ১৭ দিন পেরিয়ে গেলেও আসামিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।তবে মাফিয়ার পরিবার এটি হত্যা বললেও মেহেদীর পরিবার বলছে এটি আত্মহত্যা। এ ঘটনায় মহিপুর থানা একটি মামলা হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ রয়েছে মাফিয়ার পরিবারের। ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, পুলিশ ইচ্ছা করেই আসামিদের গ্রেফতার করছেন না। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী নিহত মাফিয়া বেগমের ভাই বনিআমিন বলেন, আমার বোনকে মারধরের পরে আমার বোন জামাইসহ পরিবারের লোকজন গলা টিপে হত্যা করে। পরে অসুস্থতা সাজিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। বোনকে হাসপাতালে রেখেই সকলে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় আমরা মামলা করতে গেলে মহিপুর থানা পুলিশ প্রথমে গড়িমসি করেন। পরে পহেলা এপ্রিল মামলা আমলে নিলেও কোন আসামিকে তারা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি। আসামিদের লোকেশন সনাক্ত করে পুলিশকে খবর দিলেও অজ্ঞাত কারণে আসামিদের গ্রেফতার করছেন না। মামলার বাদী মাফিয়া বেগমের মা হাফিজা বেগম আক্ষেপ করে বলেন, আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। ঘটনার ২৮ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কোনরকম সহযোগিতা করছেন না। আসামীরা এখনো ঘুরে বেড়ান আমাদের চোখের সামনে। এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু হানিফ বলেন, ঘটনাটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, সে বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে। মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: তরিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।