মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে ২০ এপ্রিল যশোর শহর শহরতলীতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ।
বিভিন্ন মামলার আসামি, নানা অভিযোগে অভিযুক্ত এমন আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের বাড়িতে এ অভিযান চলেছে বলে জানা গেছে। এদিন সাবেক এমপি শাহীন চাকলাদার, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল ও যুবলীগ নেতা শফিকুজ্জামান জুয়েলের বাড়িতে অভিযান পরিচালিত হয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি।
যশোরের কাজীপাড়া সহ আরো কয়েকটি এলাকায় অভিযান চলমান ছিল। তবে এই অভিযানে কাউকে আটক করা হয়েছে কিনা এ ব্যাপারে পরিষ্কার তথ্য দেয়নি পুলিশ।
যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি সূত্র জানিয়েছে, তাদের কয়েকটি টিম ও কোতোয়ালি থানা পুলিশের কয়েকটি টিমসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এ অভিযান চালাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা সমুন্নত রাখতে মাদক সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানানো হয়েছে ডিবি থেকে। সূত্রের দাবি অভিযানে আওয়ামী লীগ যুবলীগ ও ছাত্রলীগ ঘরানার অনেক নেতা কর্মীর বাড়িতে অভিযান চলেছে। এই অভিযানে বেশ কয়েকজন আটক হয়েছেন বলেও তথ্য মিলেছে।
সূত্রের দাবি গত জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্নস্থানে থানা ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় পুলিশি মুভমেন্ট কমে যায়। আর বিগত কয়েক মাস যশোর পুলিশও কার্যকরিভাবে মাঠে না থাকার সুযোগ নিয়ে অনেকটা ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার মত জোরেসোরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল বিভিন্ন মামলার আসামি, অপরাধী, মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটগুলোর সদস্যরা। সম্প্রতি কয়েকটি খুনের ঘটনা ঘটে যায়।
আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার প্রয়োজনীয় অভিযান কমে যাওয়ায় পলাতক আওয়ামী লীগ যুবলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের লোকজন সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। তারা কোনো অঘটন ঘটাতে পারে এমন শঙ্কা উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। আবার নানা ঘটনায় জড়িত থাকা এবং আবার অনেকে পুরোনো অনেক ঘটনায় করা নতুন মামলায় আসামি হয়েছেন। আবার অনেক উঠতি সন্ত্রাসী সম্প্রতি নানা অঘটন ঘটিয়ে চলেছে।
সব মিলিয়ে পরিস্থিতি উত্তরণে ২০ এপ্রিল অভিযান চলমান চলেছ এবং এখনো চলমান রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সাবেক এমপি ও যশোর জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদের বাড়িতে, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল এবং যুবনেতা শফিকুজ্জামান জুয়েলের বাড়ি খানিক সময় ঘিরে রাখে পুলিশ। তাদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নেয় অভিযানিক টিম। তারা ওই বাড়িতে কাজকর্ম করা লোকজনের সাথেও কথা বলেন। তবে এ সময় এ তিনজনের কেউই বাড়িতে ছিলেন না।
এছাড়া আরো কয়েক নেতার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে।
তবে, আত্মগোনে থাকায় অনেক নেতাকর্মীকে পায়নি পুলিশ। যশোর শহরের কাজীপাড়া, পুরাতন কসবা, বারান্দিপাড়া, সিটি কলেজপাড়া, চাঁচড়া রায়পাড়া, বিরামপুর, উপশহর, খোলাডাঙ্গা, ধর্মতলা, পালবাড়ি, ষষ্টিতলাপাড়া, শংকরপুর, রেলগেট, বেজপাড়া, আরএন রোড, খড়কী, কারবালা এলাকাসহ কয়েকটি স্পটের নেতাকর্মীর বাড়িতে অভিযান পারিচালিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মনজুরুল হক গণমাধ্যমের সামনে জানিয়েছেন, বিভিন্ন মামলার আসামি আটক করতে অপরাধ সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বিশেষ করে মাদক কারবারি সন্ত্রাসী ও বিভিন্ন মামলার আসামি ও নানা অভিযোগে অভিযুক্তদের বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে। শুধু আওয়ামী ঘরানার লোকজনের বাড়িতে অভিযান চলছে এমনটি নয়। অভিযান চলমান রয়েছে। অভিযানে আটককৃতদের তথ্য পরে জানানো হবে। চলমান পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সুযোগ নিয়ে অপ্রতিরোধ্য সিন্ডিকেটগুলোর দিকেও নজরদারি করছে পুলিশ। সুনিদিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অপরাধীদে বিরুদ্ধে এ অভিযান চলছে। মাদক ব্যবসায়ীসহ সব ধরণের অপরাধী আটক ও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।