যিনি পরিচ্ছন্ন কর্মী তিনিই ডাক্তার।
লাখাইয়ের করাব মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র হাসপাতালের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা চিকিৎসকের অনুপস্থিতে ‘পরিচ্ছন্ন কর্মী প্রসব করাতে গিয়ে নবজাতকের জন্ম হলেও প্রসুতি মায়ের নিচ সিজার করেন পরিছন্ন কর্মী এবং সেলাই করতে গিয়ে পায়খানা এবং প্রসাবের রাস্তা একত্রিত করে সেলাই করেন বলে এমন অভিযোগ ওঠেছে।
জানাযায়, শুক্রবার (১৮ ই এপ্রিল ) সকালে করাব মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ঘটে এমন ঘটনা।করাব পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ডেলিভারি সেবা নিতে আসেন উপজেলা মনতৈল গ্রামের রহমত আলীর মেয়ে জুয়েনা আক্তার (২৫) নামের গর্ভবতী মহিলা।আসার পর পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা সুচিত্রা রানী না থাকায় গর্ভবতী মায়ের প্রসব(ডেলিভারি)
করান পরিচ্ছন্ন কর্মী অনুরূপা রানী দাস (৪৬), এবং পরিচ্ছন্ন কর্মী নিজেই নিচ সিজার করে সেলাই করেন। সন্তান প্রসব হওয়ার পর প্রসূতি মা জুয়েনা আক্তার ও নবাগত শিশু সন্তানকে নিয়ে বাড়ি চলে যায় স্বজনরা। বাড়ি যাওয়ার পর তার প্রস্রাব এবং পায়খানা রাস্তায় ইনফেকশন শুরু হয়। এবং পরিচ্ছন্ন কর্মী অনুরূপা রানী দাস কে বিষয়টা জানালে সে জুয়েনার বাড়ি মনতৈল গ্রামে গিয়ে, পরবর্তীতে পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে আসার পরামর্শ দেন। এবং পরিচ্ছন্ন কর্মী যে ডেলিভারি করিয়েছে সেটা কাউকে না বলার জন্য কাকুতি মিনতি করেন জুয়েনা আক্তারের পরিবারের কাছে। এবং স্বীকার করেন আমি জুয়েনা কে সুস্থ করার জন চিকিৎসার সকল খরচ বহন করব। তখন পরিছন্ন কর্মী আরো বলেন আমি ডাক্তার না। পরের দিন করাব পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে জুয়েনা আক্তার কে নিয়ে আসলে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা(FWV) সুচিত্রা রানী জুয়েনার অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং ভুলভাবে সেলাই হয়েছে দেখে জানতে চায় কে এমন করেছে। তখন জুয়েনা আক্তার এবং জুয়েনা আক্তারের পরিবার জানান পরিছন্ন কর্মী অনুরূপা রানী দাস এমন কাজ করেছেন।স্বজনদের দাবি,পরিচ্ছন্ন কর্মী টাকার লোভের কারণেই প্রসুতি মায়ের সেলাইয়ে ইনফেকশন হয়েছে।
শুধু তাই নয় পূর্ব বুল্লা গ্রামের ইয়াকুব হাসান অন্তর বলেন,আমি এক সপ্তাহ আগে করাব পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে আমার স্ত্রীকে ডেলিভারি সেবা দেওয়ার জন্য নিয়ে গিয়েছিলাম,তখন পরিচ্ছন্ন কর্মী অনুরুপা রানী দাস আমাকে একটি ওষুধ কিনে খাওয়াতে পরামর্শ দেন। এবং সেই ওষুধ খেয়ে আমার স্ত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে,আমি তাৎক্ষণিক পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা(FWV) সুচিত্রা রানী কে অবগত করলে,দ্রুত নিয়ে আসতে বলেন। এবং আমাকে ওই ওষুধ খাওয়ানো ঠিক হয়নি বলে জানান।
এ ব্যাপারে প্রসূতি মা জুয়েনা আক্তার জানান, আমরা যখন এখানে চিকিৎসা নিতে আসি, তখন অনুরূপা রানী দাস আমাদের চিকিৎসা করান।
আমরা সাধারন মানুষ, কে ডাক্তার, কে পরিচ্ছন্ন কর্মী আমরা কিছুই বুঝতে পারি না। আমরা ভাবছিলাম অনুরূপা রানী দাস এই হাসপাতালের ডাক্তার।তাই তিনি আমাকে প্রসূতি (ডেলিভারি) করিয়েছি।
এ ব্যাপারে পরিচ্ছন্ন কর্মী অনুরূপা রানী দাস এর সাথে যোগাযোগ করলে, ঘটনা সততা স্বীকার করে বলেন আমার ভুল হয়েছে। আমি জুয়েনার সকল চিকিৎসার খরচ বহন করব।
এ ব্যাপারে করাব পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা সুচিত্রা রানী সাথে আলাপ হলে, তিনি ঘটনার সততা স্বীকার করে বলেন , আমি বিষয়টা আমাদের ঊর্ধ্বতন কে অবগত করেছি। তারা দ্রুত এর ব্যবস্থা নেবেন।
এব্যাপারে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নাঈমুর রহমান পিয়াস তার সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, আমি বিষয়টা অবগত হয়েছি আরো আগে, ওই বিষয়ে পরিচ্ছন্ন কর্মীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।