নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় গার্মেন্টসকর্মী কমলা খাতুন (২৬) হত্যা মামলার রায়ে আসামী পূর্বধলা উপজেলার নিজাম উদ্দিন (৩৩) কে মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছেন নেত্রকোনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। অধিকন্তু আসামিকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ডাদেশ প্রদান করে বিজ্ঞ আদালত। মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী নিজাম উদ্দিন পুর্বধলা উপজেলার আগিয়া গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে। আজ রবিবার (০৪ এপ্রিল) দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে আসামীর উপস্থিতিতে বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. হাফিজুর রহমান এ রায় দেন। আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলার রাত্রা গ্রামের মাহতাব উদ্দিনের মেয়ে কমলা খাতুনের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর কমলার ছোটবোন চম্পার সাথে গাজীপুরের টঙ্গী মীরা বাজারে একটি গার্মেন্টস এ চাকুরি নেন। সেখানে বোনের সাথে থেকে চাকুরিরত অবস্থায় বিভিন্ন জনের সাথে তার প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোনে প্রায়শই কথোপকথন হতো। নিয়মিত ঈদসহ বিভিন্ন ছুটিতে বাড়িতেও আসতো। গত ২০২২ সনের ১৮ নভেম্বর কলমা খাতুন টঙ্গী মিলগেট এলাকায় ভাজিতা মাসুদের বাড়ি বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বেড়িয়ে নিখোঁজ হন। ঠিক পরের দিন ১৯ নভেম্বর বিকালে নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা থানার খলিসাউড়া ইউনিয়নের পাবই দাসপাড়া বালুচড়া বাজারের দক্ষিণ পাশে পাকা সড়কের কাছ থেকে পেটের ভুরি বের হয়ে যাওয়া এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পিবি আই সহ এক্সপার্ট দের মাধ্যমে লাশের সুরত হাল শেষেময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এরই মধ্যে লাশের পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ। খবর পেয়ে কমলার বড় ভাই নিজাম উদ্দিন (৩৫) মর্গে গিয়ে বোনের লাশ শনাক্ত করে নিজে বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে পূর্বধলা থানায় মামলা হত্যা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ পিবিআই তদন্ত করে বাদীর নামে নামে পুর্বধলা উপজেলার আগিয়া গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে নিজাম উদ্দিনকে (৩৩) গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রযুক্তিসহ সকল তদন্ত শেষে পুলিশ পরের বছর (২০২৩ সনের) ৩১ আগস্ট আদালতে চূড়ান্ত চার্জশিট দাখিল করে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার অভিযোগ সন্ধেহাতীত ভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়। মোট ১১ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় এ মামলায়। রবিবার দুপুরে বিচারক আসামী নিজাম উদ্দিনকে গলায় রশি দারা ফাঁসিতে মৃতুদন্ডাদেশ কার্যকর করার নির্দেশ দেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন আবুল হাশেম। আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন শামসুদ্দিন আহমেদ।