বগুড়া সদর উপজেলার চক সূত্রাপুর এলাকায় মঙ্গলবার (১৩ মে) রাত আনুমানিক ১টা ৪৫ মিনিটে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ এনামুল হক (৩৫) তার নিজ বাসায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অবস্থানকালে সন্ত্রাসীরা তার বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে দরজা ও জানালায় ভাঙচুর চালায় এবং এনামুল হককে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে।ছেলের রক্তাক্ত দেহ দেখে মা আছমা বেগম তাৎক্ষণিকভাবে স্ট্রোক করেন এবং ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। এ সময় তার কন্যা মোছাঃ বৃষ্টি খাতুনকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরিকাঘাতের চেষ্টা চালায় সন্ত্রাসীরা। পরে এলাকার মানুষ ধাওয়া দিয়ে তাদের উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। ভুক্তভোগী এনামুল হক বগুড়া সদর থানায় লিখিত অভিযোগে জানান, তার মেয়ে বৃষ্টি খাতুন চার বছর আগে মোঃ আবিদ নামক যুবককে ভালোবেসে রেজিস্ট্রারিভাবে বিয়ে করে। বিয়ের পর একটি ছেলে সন্তান জন্ম নিলেও বৃষ্টির ওপর নির্যাতন চলতে থাকে যৌতুকের দাবিতে। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বৃষ্টি ১ এপ্রিল ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন এবং পরে হাসপাতালে ভর্তি হন। সুস্থ হয়ে তিনি বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন। এনামুল হকের দাবি, এরপর থেকেই আবিদসহ তার পরিবার ধারাবাহিকভাবে হুমকি দিতে থাকে। গত ৩ মার্চ ও ২৪ এপ্রিলের দুটি পৃথক ঘটনায় আবিদের বাবা রতন ওরফে নাগরাজ, মা রতনা বেগম এবং চাচা মোঃ নয়ন একাধিকবার হামলা ও হুমকি দেয়। সর্বশেষ ১৩ মে রাতে তারা একত্র হয়ে এনামুল হকের বাড়িতে চরম সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালায়। হামলার সময় উপস্থিত থাকা এনামুল হকের ছোট মেয়ে ও ভাগ্নিকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। আহত অবস্থায় এনামুল হক বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বগুড়া সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। অভিযোগকারীর দাবি, তার পরিবার বর্তমানে মারাত্মক নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে এবং আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। এ বিষয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হামলার সময় তারা চিৎকার শুনে এগিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং আহতদের হাসপাতালে পাঠান। বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।