আজ বুধবার (১৪ মে) সকাল ১১ টায় মোংলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে “প্লাস্টিক ও পলিথিন দূষণ বন্ধ করি, সুন্দরবন রক্ষা করি” এ স্লোগানে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের নারী-পুরুষ সদস্যদের নিয়ে এ দক্ষতা উন্নয়ন কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
সুন্দরবনের দূষণ এবং এর পরিণতি সম্পর্কে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার জনগনকে সচেতন করার লক্ষ্য ইয়ুথ ফর দি সুন্দরবন মোংলা এর পরিচালনায় উন্নয়ন সংস্থা জার্মান কো-অপারেশন,রূপান্তর এবং হেলভেটাস এর আয়োজনে কর্মশালাটি বাস্তবায়িত হয়।
রূপান্তরের সুন্দরবন প্রকল্পের বাগেরহাট জেলা সমন্বয়কারী খন্দকার জিলানী সঞ্চালনায় কর্মশালাটির শুরুতে উপস্থিত বাজার কমিটি এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার বাস্তবতা তুলে ধরে বলেন বিশ্বজুড়ে বর্তমানে প্রতি মিনিটে ১০ লক্ষ পলিথিন ব্যাগ একবার ব্যাবহার করে ফেলে দেওয়া হয়,যার যার স্থান থেকে যদি বিক্রেতারা যদি ক্রেতাদের পলিথিনের ব্যাগে মালামাল না দিয়ে কাপরের ব্যাগ অথবা বস্তুা বা নেট ব্যাগে বাজার দেওয়ার পরামর্শ দেন। অপচনশীল প্লাস্টিক বর্জন পরিবেশে ৪০০ বছর থেকে প্রায় ১০০০ হাজার বছর পর্যন্ত টিকতে পারে।
পরিবেশযোদ্বা মোঃ নুর আলম শেখ বলেন সুন্দরবনের ৫৪ টি নদীতে প্রতিদিন প্রায় ৫০ টন পলিথিন ও প্লাস্টিক জমা হয়ে আছে,পরিবেশের ভারসাম্য হারাচ্ছে। পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্য নদী,খাল ও জলাশয়ে নিক্ষেপের ফলে এ সমস্ত বর্জ্য আশ্রয় নিচ্ছে সুন্দরবনের কোলে। মাইক্রো প্লাস্টিক কনা চরম দূষণ বাড়াচ্ছে মাটি ও পানির, নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বনের গাছপালা,বন্যপ্রাণী ও জলজ প্রাণীর উপর।যার ফলে উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে সুন্দরবনের। ফল সরুপ সুন্দরবন সংলগ্ন লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়ছে এবং দুর্যোগকালীন সময়ে ঝুকি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কর্মশালাটিতে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পশুর রিভার ওয়াটার কিপার পরিবেশযোদ্বা ও উক্ত প্রোগ্রাম মডেরটর মোঃ নুর আলম শেখ,সভাপতিত্ব করেন মোঃ সোহেল রানা,ইয়ুথ সদস্য ও উপদেষ্টা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,শাহিন খলিফা, রহমত হোসেন,উপস্থাপন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টুম্পা গুপ্ত প্রমুখ।
কর্মশালাটির প্রশিক্ষক সুস্মিতা মন্ডল পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধে – ব্যবহার হ্রাস, পুন:ব্যবহার ও পুন:প্রক্রিয়াজাত করে ব্যবহার করার কৌশল অবলম্বন করতে বলেন। তিনি বলেন পরিবেশবাদী সংস্থার তথ্যমতে প্রতিবছর সুন্দরবনের প্রায় দেড় লাখ হেক্টর বনভূমি, দূষণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের নদী থেকে সংগ্রহ করা ২৫ প্রজাতির মাছ ও দুই প্রজাতির চিংড়িতে মাইক্রোপ্লাস্টিক মিলেছে।মাছের মাংসে সর্বনিম্ন ৫ দশমিক ৩৭ থেকে সর্বোচ্চ ৫৪ দশমিক ৩০ মাইক্রোপ্লাস্টিক টুকরো পাওয়া গেছে। তাই বাংলাদেশের সুন্দরবন (ম্যানগ্রোভ বন) ও সংলগ্ন অঞ্চল সমূহের দূষণ কমানো বাস্তুসংস্থান উন্নয়নে সকলকে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানটিতে অংশ নেওয়া বাজার কমিটি এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যবহার হ্রাস করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে এবং এলাকার বাজারে বাজারের দিন বাজার কমিটি নিজ উদ্যোগে মাইকিং করে সচেতন করবে ও সকলকে সুন্দরবন ও জীব বৈচিত্র এবং জনসাস্থ্য রক্ষায় যার যার এলাকার যার যার বাড়িতে ব্যাবহারে পলিথিন ও প্লাস্টিক হ্রাসের আহ্বান জানান।