1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫, ১০:২৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
রঘুনাথপুরে ঐতিহ্যবাহী কোরবানি পশুর হাট রামপাল টেকসই বেড়িবাঁধের দাবিতে মানববন্ধন স্ত্রীসহ সাবেক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা, ভূয়া সনদপত্রে কলেজে নিয়োগ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে নারী প্রবাসীর মাইক্রুবাসে ডাকাতির ঘটনায়- ৫ ডাকাত গ্রেফতার সুন্দরগঞ্জে পর্ব শত্রুতার জেরে রফিকুলের পলের পালায় আগুন জ্বালিয়ে দেয় বাদশা মিয়ার স্ত্রী মহমুদা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে একজন বিএসএফ সদস্য আটক নড়াইলে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু ফুলবাড়ী উপজেলার ৭নং শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিএফ চাউল বিতারণ পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে সোনা মসজিদ স্থল বন্দর ১০ দিন বন্ধ কয়রায় বেড়িবাঁধ থেকে অবৈধ পাইপ অপসারণ অভিযান: ঝুঁকিতে থাকা বাঁধ রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ

কোরবানির ঈদ উপলক্ষে টুং টাং শব্দে মুখরিত সলঙ্গার কামারপট্টি

মোঃ জুবায়ের হোসাইন
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১ জুন, ২০২৫
  • ২৯ বার পড়া হয়েছে

আর মাত্র কয়েকদিন পরেই কোরবানির ঈদ। ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা বাজারের কামার শিল্পদের ব্যস্ততা। সারা বছর অলস সময় পার করলেও পশু কোরবানির জন্য প্রয়োজনীয় ধারালো সরঞ্জাম দা, ছুরি, চাপাতি ও বঁটি তৈরিতে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার কামাররা। একদিকে বেড়েছে কয়লা ও লোহার দাম অন্যদিকে দক্ষ শ্রমিকের অভাব হওয়ায় দুশ্চিন্তায় ভুগছেন এ পেশায় জড়িত ব্যবসায়ীরা।

আজ রবিবার (১ জুন) সকালে সলঙ্গা বাজার কদমতলা এবং রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মাহমুদপুর গ্রামের কামারপট্টিতে গিয়ে দেখা যায়, টুংটাং শব্দে মুখর কামারপট্টি। কয়লার চুলায় জ্বলছে আগুন। কেউ ভারী হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন আগুনরঙা লোহার খণ্ড। কেউ ভোঁতা হয়ে পড়া দা ও ছুরিতে শাণ দিচ্ছেন। কেউবা হাপর টানছেন। কয়লার আগুনে বাতাস দিচ্ছেন। কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু হয়ে মধ্যরাত পর্যন্ত এভাবেই নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছেন কারিগররা। তবে বাজারে চায়নার তৈরি ছুরি, চাপাতিতে সয়লাব হওয়ার কণে কপালে চিন্তার ছাপ পড়েছে অনেক কামার শিল্পদের।

‎এদিকে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রতিবছর নতুন ছুরি-চাপাতি কেনার জন্যে দোকানগুলোতে যেমন ভিড় বাড়ে তেমনি পুরানো ছুরি-চাপাতি ধার দেবার জন্যেও কামারপট্টিতে ভিড় করেন লোকজন। বছরের এই সময়টাতে তাই দোকানগুলোতে পশু জবাই ও চামড়া ছাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত নানা ধরনের ছুরি, চাপাতি, দা, বঁটি সাজিয়ে রাখেন দোকানিরা।

কামারপট্টির কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা যায়, ছুরি, চাকু ও বঁটির বেচাকেনা বেড়েছে। দামও সন্তোষজনক। বর্তমানে প্রতি পিস বটি ৪৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা, চাপাতি কেজি ৬০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা, ছোট ছুরি সর্বনিম্ন ১৫০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে জবাই করার ছুরি ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লোহার ও কয়লার দাম বাড়ায় প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বেড়েছে বলে জানান বিক্রেতারা।

সলঙ্গা বাজারের কামার শিল্প আব্দুস সামাদ বলেন, একসময় আমাদের এখানে অনেক দোকান থাকলেও তবে এখন কমতে কমতে আমাদের অল্প কয়েকটি দোকান আছে মাত্র। বাজারে চায়না জিনিসপত্র বেড়ে যাওয়ায় আগের মত এখন আর কাস্টোমার আসে না। শুধু কোরবানির সময়ই আমাদের কাজের চাপ বাড়ে তাছাড়া বারো মাস তেমন কোন কাজের চাপই থাকে না আরকি।

কামার শিল্প হাসেম আলী বলেন, মাত্র কয়েকদিন হলো কাজের চাপ বেড়েছে। আগে তো সারাদিন বসেই থাকতাম। কোরবানির আগ পর্যন্ত আমাদের চাহিদা থাকবে এরপর আর কাজের কোন খবর থাকে না। সারা বছরই আমাদের কষ্ট করে চলতে হয়। সরকার থেকেও কোন ধরনের সহযোগিতা আমরা পাই না। এভাবে বেশিদিন চলতে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে। এক সিজনে ব্যবসা করে কি সারা বছর চলা যায়।

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের কামারপট্টির কারিগর আইয়ুব,রেজা অভিযোগ করে বলেন, পরিশ্রমের তুলনায় মজুরি অনেক কম। সারা দিন আগুনের পাশে বসে থাকতে হয়। ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা শরীরে তৈরি হয়। সারাদিন কাজ করে মাত্র ৪শ,৫শ টাকা পাই। এই টাকা দিয়ে আমাদের সংসার চলে না।

থানামোড়ের ক্রেতা মোঃ রমজান আলী,চড়িয়া মধ্যপাড়ার হোটেল ব্যবসায়ী হাফিজ জানান, গত বছরের তুলনায় এবার দাম কিছুটা বেশি। বছরে একবার ক্রয় করতে হয় বলে একটু বেশি দাম দিয়েই ক্রয় করেছি। তবে চায়না প্রোডাক্টের তুলনায় এদের কাজ অনেক ভাল এবং টেকেও বেশি দিন তাই এখান থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করি।

সলঙ্গা থানা বিএনপির সাবেক সদস্য ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতির আফছার আলী জানান,সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সলঙ্গা অঞ্চলে কমে যাচ্ছে কামার সম্প্রদায়। বাধ্য হয়ে পৈত্রিক পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশা বেছে নিয়েছেন অনেকে। অনেকের প্রত্যাশা সরকারি পৃষ্ঠপেষকতা পেলে এ শিল্প আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে আমি মনে করি।

এ বিষয়ে তিনি আরও জানান, সলঙ্গা বাজার সহ অত্র এলাকায় প্রায় ২৫/৩০ টি পরিবার লৌহজাত দ্রব্য বানিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে আসছে। প্রবিণ এ শিল্প টিকিয়ে রাখতে চাইলে তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ ও সহজ শর্তে ঋণ প্রদানসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com