1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫, ১১:১২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
রঘুনাথপুরে ঐতিহ্যবাহী কোরবানি পশুর হাট রামপাল টেকসই বেড়িবাঁধের দাবিতে মানববন্ধন স্ত্রীসহ সাবেক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা, ভূয়া সনদপত্রে কলেজে নিয়োগ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে নারী প্রবাসীর মাইক্রুবাসে ডাকাতির ঘটনায়- ৫ ডাকাত গ্রেফতার সুন্দরগঞ্জে পর্ব শত্রুতার জেরে রফিকুলের পলের পালায় আগুন জ্বালিয়ে দেয় বাদশা মিয়ার স্ত্রী মহমুদা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে একজন বিএসএফ সদস্য আটক নড়াইলে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু ফুলবাড়ী উপজেলার ৭নং শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিএফ চাউল বিতারণ পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে সোনা মসজিদ স্থল বন্দর ১০ দিন বন্ধ কয়রায় বেড়িবাঁধ থেকে অবৈধ পাইপ অপসারণ অভিযান: ঝুঁকিতে থাকা বাঁধ রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ

চুয়াডাঙ্গার উথলী স্টেশনে আকাশ হত্যার বিচারের দাবিতে ট্রেন আটকিয়ে মানববন্ধন

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১ জুন, ২০২৫
  • ৫১ বার পড়া হয়েছে
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার সেনেরহুদা গ্রামের আব্দুল গাফফার আকাশ হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে ট্রেন আটক করে মানববন্ধন করা হয়েছে। উথলী ইউনিয়নবাসী ও শোকার্ত পরিবারের ব্যানারে রোববার ১ জুন সকাল সাড়ে ৮ টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত উথলী রেলস্টেশনে ২ ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন করা হয়।
এসময় খুলনা হতে রাজশাহীগামী আন্তঃনগর কপোতাক্ষ ট্রেন সকাল ৯টা ২০ মিনিটের সময় উথলী রেলস্টেশনে পৌঁছালে মানববন্ধনের কারণে ট্রেনটি আটকা পড়ে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্য, পুলিশ এবং এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রায় ১ ঘণ্টা অপেক্ষার পর ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
এলাকাবাসী জানায়, রোববার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সেনেরহুদা গ্রামসহ আশপাশের এলাকায় লোকজন মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেয়। আকাশ হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায় তারা। দাবি পূরণ না হলে পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় মানববন্ধন থেকে। সকাল ৯টা ২০ মিনিটের দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী আন্তঃনগর  কপোতাক্ষ ট্রেন থামিয়ে ট্রেনের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে তারা।
মানববন্ধনে উথলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, সেনেরহুদা জান্নাতুল খাদরা দাখিল মাদরাসার শিক্ষক মহিউদ্দিন, নিহত আকাশের বাবা জিন্নাত আলী বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে তারা বলেন, আকাশকে পরিকল্পিতভাবে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এ হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
উল্লেখ, গত ২১ মে কপোতাক্ষ ট্রেনযোগে চুয়াডাঙ্গা থেকে বাড়ি ফেরার পথে জয়রামপুর আখ সেন্টারের নিকট রেল লাইনের পাশে পড়ে ছিল গাফফার আলী আকাশ (২৫) নামে এক যুবকের মরদেহ। এলাকাবাসীর ধারণা ট্রেন থেকে ছিটকে পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে।
আকাশ জীবননগর উপজেলার সেনেরহুদা গ্রামের জিন্নাত আলীর একমাত্র ছেলে। তিনি চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাৎক্ষণিকভাবে তার মৃত্যুর সঠিক কারণ কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি। পরদিন চুয়াডাঙ্গার সকল আঞ্চলিক পত্রিকাসহ কিছু জাতীয় পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রেন থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে সংবাদ প্রচার করা হয়।
এদিকে আকাশের মৃত্যুর কয়েকদিন পর মৃত্যুর ঘটনার নতুন মোড় নেয়। পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য। পরিবারের দাবি, একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডকে নিছক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী থেকে খুলনাগামী আন্তঃনগর কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনের ‘ঙ’ বগিতে দায়িত্বে থাকা টিটিইসহ রেলওয়ে পুলিশ ও এটেনডেন্টরা আকাশকে ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছে বলে নিহত আকাশের পিতা জিন্নাত আলী দাবি করেছেন।
এ ঘটনায় নিহত আকাশের পিতা জিন্নাত আলী বাদি হয়ে গত ২১ মে ওই ট্রেনের ‘ঙ’ বগিতে দায়িত্বে থাকা ২ জন রেলওয়ে পুলিশ, ১ জন টিটিই এবং ২ জন এটেনডেন্টকে আসামি করে চুয়াডাঙ্গা আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
আসামিরা হলেন- ট্রেনের ‘ঙ’ বগিতে দায়িত্বে থাকা টিটিই লালন চক্রবর্তী (৪২), রেলওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক পারভেজ (৩৬), কনস্টেবল কাদের (৪০), এটেনডেন্ট মিলন (৩৭) ও সোহাগ মিয়া (৩৬)।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গাফফার আলী আকাশ অফিস শেষে প্রতিদিনের মতো কপোতাক্ষ ট্রেনযোগে চুয়াডাঙ্গা থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন। ঘটনার দিন কপোতাক্ষ ট্রেনের ‘ঙ’ বগিতে দায়িত্বে থাকা টিটিই, রেলওয়ে পুলিশ ও এটেনডেন্টরা টিকিট না কেটে উঠা যাত্রীদের সাথে চরম দুর্ব্যবহার করছিলেন এবং তাদের কাছে অবৈধভাবে অনেক টাকা দাবি করছিলেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় রেলওয়ে পুলিশসহ অন্যরা আকাশকে টেনে-হেঁচড়ে দরজার কাছে নিয়ে যায় এবং জয়রামপুর রেল স্টেশনের নিকট দরজা থেকে তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। এ মামলায় ৪ জন প্রত্যক্ষদর্শী যাত্রী স্বাক্ষীও প্রদান করেছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কপোতাক্ষ ট্রেনের একই বগিতে থাকা একাধিক যাত্রীর কাছ থেকে তথ্য পেয়ে আকাশ হত্যার সঠিক বিচার পাওয়ার জন্য আইনের আশ্রয় নিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার। পরিবারের পক্ষ থেকে প্রত্যক্ষদর্শী এক যাত্রীর সাথে কথোপকথনের কল রেকর্ড হাতে পাওয়া গেছে। রেকর্ডে রাজশাহী থেকে ওঠা ওই ট্রেনের এক যাত্রী বলেছেন, আমরা ওই ট্রেনের ‘ঙ’ বগিতে ৭১ নম্বর সিটে বসে ছিলাম। এক পর্যায়ে দেখতে পাই লাল গেঞ্জি পরিহিত একটা ছেলেকে (আকাশ) বগিতে দায়িত্ব থাকা কয়েকজন লোক টেনে হেঁচড়ে দরজার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। দরজার কাছে নিয়ে যাওয়ার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই ওই ছেলেকে ধাক্কা দিয়ে বাইরে ফেলে দেয়। আমি জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি ছেলেটার মাথা নিচের দিক দিয়ে পড়ে যাচ্ছে। সেখানে দুইজন পুলিশ উপস্থিত ছিল। তাদের সামনেই এই ঘটনা ঘটে।
কল রেকর্ডে আরও শোনা যায়, তারা দর্শনা হল্ট স্টেশনে নামার পর ঘটনার সময় উপস্থিত থাকা কাদের নামের এক পুলিশের কাছে জানতে চায়, ছেলেটার অপরাধ কি ছিল? পুলিশ কোনো উত্তর না দিয়ে চলে যায়।
বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান আকাশ অত্যন্ত নম্র, ভদ্র ও শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিলে। তার অকাল মৃত্যুরহস্য উদঘাটন করে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন এলাকাবাসী।হাবিবুর হাকিম চুয়াডাঙ্গা
এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com