পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কুশারিয়া খাজার চালা কোরবানির পশুর হাট এখন জমজমাট। দূর-দূরান্ত থেকে খামারি ও ব্যবসায়ীরা তাদের লালন-পালন করা গরু নিয়ে হাটে ভিড় করছেন।মূলত মধ্যম আকারের দেশি গরুর চাহিদা বেশি থাকলেও বড় আকৃতির গরুর প্রতি আগ্রহী ক্রেতার সংখ্যাও কম নয়।
হাটে গরু নিয়ে আসা অনেক খামারি জানিয়েছেন, এ বছর গো-খাদ্যের দাম গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩০-৪০ শতাংশ বেড়েছে। খড়, ভুষি, খৈল, দানাদার খাবারসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ অনেক বেশি হওয়ায় গরু বড় করতে গিয়ে তাদের প্রচুর টাকা ব্যয় হয়েছে। কিন্তু বাজারে গরুর দাম আশানুরূপভাবে বাড়েনি। ফলে তারা লাভ তো দূরের কথা, অনেকেই মূল খরচ উঠবে কিনা তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় আছেন।
স্থানীয় খামারি মো.আকবর হোসেন বলেন, “গত বছর যে গরু ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি, একই আকৃতির গরু এবার ১ লাখ ৫ হাজারেও বিক্রি হচ্ছে না। অথচ খরচ বেড়েছে অনেক বেশি।”
অন্যদিকে, ক্রেতারা এই দাম কমার প্রবণতাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। অনেকেই বলছেন, এবার হাটে এসে তারা স্বস্তি পেয়েছেন। গরুর দাম গতবারের তুলনায় কিছুটা কম হওয়ায় পছন্দের গরু কিনতে সুবিধা হয়েছে।
ঘাটাইল উপজেলার এক ক্রেতা মোশারফ হোসেন বলেন, “অন্য বছরের তুলনায় এবার হাঁটে গরু বেশি আছে এবং দামও অনেক কম”
হাটের পরিচালনা কমিটি জানিয়েছে, হাটে নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। থাকছে পুলিশি টহল ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি। পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমও মাঠে রয়েছে।
হাট ইজারাদার বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি ক্রেতা ও বিক্রেতাদের জন্য নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় পরিবেশ নিশ্চিত করতে। প্রতিটি গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে হাটে তোলা হচ্ছে।”
বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানা গেছে। বড় খামারগুলো কিছুটা হলেও লোকসান সামাল দিতে পারবে, তবে যারা এক বা দুইটি গরু লালন-পালন করেছেন, তাদের অবস্থা সংকটাপন্ন।
হাটে আসা অধিকাংশ বিক্রেতাই এখন ঈদের আগের তিন-চার দিনের দিকে তাকিয়ে আছেন। সাধারণত শেষ সময়ে বেচাকেনা বেশি হয় এবং দাম কিছুটা বাড়ে। তাই শেষ মুহূর্তে বাজার চাঙা হবে এমনটাই প্রত্যাশা খামারিদের।