1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ১২:৪৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সুনামগঞ্জ দিরাই উপজেলার হাতিয়া গ্রামের সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে যৌথবাহিনির অভিযান লালমনিরহাটে শায়েখে চরমোনাইয়ের স্টেজের দিকে ধেয়ে আসা এক ব্যাক্তি গণপিটুনিতে প্রহারিত হয় ইন্দুরকানীতে বেড়িবাঁধের অভাবে ঝুঁকিতে লক্ষাধিক মানুষ আগুনে দগ্ধ হওয়া নারীর পাশে গিয়ে দারালেন মানবতার ফেরিওয়ালা মেয়র প্রার্থী খোরশেদ আলম মাদারগঞ্জে নাশকতায়-২ এবং ইয়াবাসহ আটক ৩ এইচ এস সি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান ২০২৫ তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা রায়গঞ্জে বিএনপির সংবাদ সম্মেলনের পাল্টা জামায়াতের সংবাদ সম্মেলন আবারো দোষে করল নড়িয়া গোলাম মাওলা সেতুর বাইপাস সেতু কুড়িগ্রামে হাসপাতালে করোনা শনাক্তের জন্য ভবন থাকলেও নেই পিসিআর যন্ত্রাংশ ও জনবল

অবহেলার এক যুগ পার, তবুও মেরামত হয়নি ঢেমশা রোড! চরম ভোগান্তিতে হাজারো শিক্ষার্থী-বাসিন্দা

মোরশেদুল আলম চট্রগ্রাম
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫
  • ৪৫ বার পড়া হয়েছে
স্থান:উত্তর ঢেমশা,সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম – ২২ জুন ২০২৫]
দীর্ঘ এক যুগেও মেরামত হয়নি সাতকানিয়ার ঢেমশা রোড। সামান্য বৃষ্টিতে হাঁটুপানি, জলাবদ্ধতায় শিক্ষার্থী থেকে বৃদ্ধ সকলের চরম দুর্ভোগ। স্থানীয় বড়ুয়া পাড়া, শিকদার পাড়া, মাষ্টার বাড়ি ও বারিশ সিকদার বাড়ি বাসিন্দাদের আর্তনাদ!
সাতকানিয়া উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঢেমশা রোড শুধু একটি সড়ক নয়, এটি হাজারো শিক্ষার্থী, কর্মজীবী ও সাধারণ মানুষের রক্তনালী। কিন্তু দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি পরিণত হয়েছে বাসিন্দাদের দুঃস্বপ্নে। জরাজীর্ণ, গর্তে খচিত আর সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুপানি জলাবদ্ধতায় পরিণত হওয়া এই রাস্তা প্রতিদিন অসহনীয় যন্ত্রণার বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে বড়ুয়া পাড়া, শিকদার পাড়া, বরিশ সিকদার বাড়ি ও মাষ্টার বাড়িসহ আশেপাশের এলাকার হাজারো মানুষের উপর।
ঢেমশা রোডের বর্তমান অবস্থা দেখলে যে কারও চোখ কপালে উঠবে। রাস্তাটি প্রায় পুরোটাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গভীর গর্ত, ভাঙা ইট আর ধসে পড়া পিচ ঢেকে দিয়েছে চলার পথ। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তা পরিণত হয় ছোট নদীতে। জলাবদ্ধতার কোনো সুষ্ঠু নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে যায়। যানবাহন চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে, পথচারীদের জন্য তা হয় দুর্গম পথযাত্রা।
শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ:
এখানকার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হলেন হাজার হাজার স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। ঢেমশা রোডের আশেপাশে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অবস্থিত হওয়ায় এই রাস্তাই তাদের প্রতিদিনের যাতায়াতের প্রধান পথ। বৃষ্টির দিনে স্কুল-কলেজে যাওয়া তাদের জন্য এক অসমসাহসিক অভিযানে পরিণত হয়। বই-খাতা ভিজে নষ্ট হওয়া, পিচ্ছিল রাস্তায় পড়ে যাওয়ার ভয়, পানি বাহিত রোগের ঝুঁকি আর বিশ্রী কাদায় নিমজ্জিত হয়ে ক্লাসে যাওয়া তাদের নিত্যদিনের লড়াই। অনেক অভিভাবক সন্তানের নিরাপত্তার ভয়ে বৃষ্টির দিনে তাদের স্কুলে পাঠাতেই ভয় পান।
স্থানীয় বাসিন্দাদের আর্তনাদ:
বড়ুয়া পাড়া, শিকদার পাড়া,বারিশ সিকদার বাড়ি ও মাষ্টার বাড়ির বাসিন্দারা এই রাস্তার চরম ভুক্তভোগী। দৈনন্দিন কাজে বের হওয়া, বাজার করা, অফিসে যাওয়া, জরুরি প্রয়োজনে বাইরে যাওয়া – সবকিছুই অসম্ভব হয়ে পড়ে সামান্য বৃষ্টিতেই। বয়োবৃদ্ধ ও শিশুদের জন্য অবস্থা আরও ভয়াবহ। অ্যাম্বুলেন্স বা জরুরি যানবাহন প্রবেশ করা প্রায় অসম্ভব।
ভুক্তভোগীরা বলেন এক ফোঁটা বৃষ্টিতেই রাস্তা ডুবে যায়। ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে গিয়ে রোজ মাথায় হাত পড়ে। জুতাগুলো সব নষ্ট, অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকে।
বাজারে যেতে হলে কাপড় উপরে তুলে, কাদা-পানি ভেঙে হাঁটতে হয়। লজ্জা-অপমান তো আছেই, বিয়ে-শাদি, জরুরি কাজ সব বন্ধ থাকে।”
স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বহীনতা:
দীর্ঘ বছরের এই ভোগান্তির মূলে রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতা। এমপি আসে এমপি যায়,চেয়ারম্যান আসে চেয়ারম্যান যায়, মেম্বার আসে মেম্বার যায় কিন্তু ঢেমশাবাসীর ভাগ্য বদলায় না ! বারবার আবেদন-নিবেদন, করেও স্থানীয় বাসিন্দারা কোনো ইতিবাচক সাড়া পাননি। রাস্তাটি মেরামত বা জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। এই অবহেলা সরাসরি জনগণের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
বাসিন্দাদের জোরালো দাবি:
বিপর্যস্ত ঢেমশা রোডের বাসিন্দারা এখন আরও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন তাদের এই দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ মুক্তির।
তাদের দাবি অত্যন্ত স্পষ্ট:
অবিলম্বে ঢেমশা রোডের পূর্ণাঙ্গ ও টেকসই মেরামত কাজ শুরু করতে হবে।
জলাবদ্ধতা নিরসনে আধুনিক ও কার্যকর ড্রেনেজ সিস্টেম স্থাপন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
রাস্তার আশেপাশের অবৈধ দখলদারিত্ব উচ্ছেদ করে রাস্তার প্রস্থ বাড়াতে হবে।
ভবিষ্যতে রাস্তার নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
ঢেমশা রোড শুধু কংক্রিট ও পিচের পথ নয়, এটি সাতকানিয়ার হাজারো মানুষের জীবনযাত্রার পথ। এই পথ যখন প্রতিদিন দুর্ভোগ আর যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তখন তা প্রশাসনিক ব্যর্থতারই পরিচয় বহন করে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। বড়ুয়া পাড়া, শিকদার পাড়া, বারিশ সিকদার বাড়ি ও মাষ্টার বাড়ির মানুষের আর্তনাদ যেন এবার কর্ণগোচর হয়। দ্রুততম সময়ে ঢেমশা রোডের জরাজীর্ণ চেহারার আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে বাসিন্দাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার দাবি সবার। এই ভোগান্তির অবসান হোক – এই হোক সকলের কামনা।
এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com