1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার ক্ষিদ্র লক্ষ্মীপুর গ্রামের সাকির, পিতা: ফকির নামে এক গাছি রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত করছেন খেজুরগাছ কেশবপুরে প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ টাঙ্গাইলে মির্জাপুর সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ইসকনের কার্যক্রম বন্ধ ও আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ চট্টগ্রামে নিহত এডভোকেট সাইফুল ইসলাম হত্যা ও ইসকনের নিষিদ্ধের দাবিতে মধুপুর আলোর ছাত্রী সমাবেশ করেন তিনি ছাত্র জনতা টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি: টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলায় উগ্রবাদী ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। যশোরে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে অ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত লাখাইয়ে প্রাইমারি বিদ্যালয়ের প্রশ্ন তৈরিতে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পথভোলা মানুষকে আল্লাহর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্যই মাহফিল প্রতিষ্ঠা হয়েছে : চরমোনাই পীর

মোংলায় রিগনের শততম জন্মদিন পালন

জিসান কবিরাজ
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১৩৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও সাহিত্যে ফাদার রিগন অভিভূত হয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধু, কবি-সাহিত্যক ফাদার মারিনো রিগনের মস্তকে ছিলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আর অন্তরে ছিলো লালন সাঁই। লালন সঙ্গীতের মধ্যে তিনি ঐশ^রিক অনুভূতি খুঁজে পেয়েছিলেন। যাজকীয় দায়িত্ব পালনের বাইরে এসে ফাদার রিগন শিল্প-সাহিত্য-শিক্ষা-সংস্কৃতির পাশপাশি উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধু ফাদার মারিনো রিগনের শততম জন্মদিনের আলোচনা সভায় বক্তারা একথা বলেন। ০৫ ফেব্রæয়ারি সোমবার সকালে মোংলার শেলাবুনিয়ায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সেন্ট পল্স উচ্চ বিদ্যালয়, সেবা সংস্থা, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এবং ফাদার রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার নারায়ন চন্দ্র পাল। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান, মোংলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কে এম রব্বানী, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাংবাদিক মোঃ নূর আলম শেখ, সেন্ট পল্স ধর্মপল্লীর সহকারি পালক পুরোহিত রিপন সরদার, ফাদার রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সুভাষ চন্দ্র বিশ^াস, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিশ^াস রনজিত কুমার, সেন্ট পল্স উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ব্রাদার এন্ড্রো জয়ন্ত কস্তা, সেবা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মিনা হালদার, প্রভাষক এস এম মাহবুবুর রহমান প্রমূখ। আলোচনা সভায় মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান বলেন মুক্তিযুদ্ধে অনন্য সাধারণ অবদানের জন্য ফাদার রিগনের অবদান বাঙালি জাতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার চিত্তে স্মরণ করবে। আর এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ফাদার মারিনো রিগনকে ২০১২ সালের ২০ অক্টোবর ”মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা” পদক প্রদান করেন। সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ন চন্দ্র পাল বলেন ফাদার মারিনো রিগনের অন্তিম ইচ্ছা পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা মোতাবেক মৃত্যুর এক বছর পর ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর মরদেহ ইতাালি থেকে বাংলাদেশে আনা হয়। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধার সম্মানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ফাদার মারিনো রিগনকে মোংলার শেলাবুনিয়ায় সমাহিত করা হয়।
আলোচনা সভার পরে ফাদার মারিনো রিগনের সমাধিতে উপজেলা প্রশাসন, মোংলা পোর্ট পৌরসভা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মোংলা সরকারি কলেজ, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, সেন্ট পল্স উচ্চ বিদ্যালয়, সেন্ট পল্স ধর্মপল্লী, সেবা সংস্থাসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করা হয়। সোমবার সন্ধ্যায় মোংলা উপজেলা অফিসার্স ক্লাবে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে স্মরণানুষ্ঠান হয়। স্মরণানুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার নারায়ন চন্দ্র পাল। স্মরণানুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহাঃ খালিদ হোসেন। স্মরণানুষ্ঠানে ইতালি থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে বক্তব্য রাখেন ফাদার মারিনো রিগনের ভাগ্নি আ্যালিসসান্দ্রা জেনিন এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়কারী শরীফ জামিল।  উল্ল্যেখ্য ১৯২৫ সালের ৫ ফেব্রæয়ারি ইতালির ভিল্লাভেরলা গ্রামের এক সংস্কৃতিবান পরিবারে মারিনো রিগনের জন্ম। পিতা রিকার্ডো রিগন। তিনি পেশায় কৃষক এবং একজন দক্ষ যাত্রা শিল্পী ছিলেন। মাতা ইতালিয়া মনিকা। পেশায় একজন শিক্ষিকা ছিলেন।  খ্রিষ্টিয় মঙ্গলময় বাণী প্রচারের উদ্দেশ্য নিয়ে ১৯৫৩ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ( বাংলাদেশে ) আসেন ফাদার মারিনো রিগন। এরপর দেশের বিভিন্ন স্থান ঘুরে অবশেষে মোংলার শেলাবুনিয়ায় স্থায়ী আবাস গড়েন। ধর্ম প্রচার ও কল্যাণমূলক কর্মকান্ডকে ছাপিয়ে ফাদার রিগনকে বিশিষ্ট করে তুলেছে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি তাঁর তীব্র অনুরাগকে। ফাদার মারিনো রিগন ইতালিয়ান ভাষায় অনুবাদ করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলিসহ প্রায় ৪০টি কাব্যগ্রন্থ, লালন সাঁইয়ের ৩৫০টি গান, জসীম উদ্দীনের নক্সীকাঁথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট ছাড়াও বাংলাদেশের খ্যাতিমান কবিদের অসংখ্য কবিতা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও লালন সাঁইজির গানের ইতালিয়ান ভাষায় অনুবাদ ছাড়াও ফাদার রিগন ’শেলাবুৃুনিয়ার রূপকথা’ ’আমার গ্রাম’ ’ভিল্লাভেরলা থেকে শেলাবুনিয়া’ নামক তিনটি বাংলা বই লিখেছেন। এছাড়া ইতালিয়ান ভাষায় ৯টি বই লিখেছেন। ইতালি লেখক কার্লো কল্লোদি’র নন্দিত রূপকথা ’কাঠের মানুষ পিনোকিও’ বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেছেন ফাদার মারিনো রিগন। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক দলের নেতৃত্ব দিয়ে এদেশের সংস্কৃতিকেও তিনি পৌছে দিয়েছেন ইতালিতে। ভিল্লাভেরলা গ্রামে ’রবীন্দ্র সড়ক’, ’রবীন্দ্র অধ্যায়ন’ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। সামগ্রিক ভাবে বললে বলা যায় ইতালিতে ফাদার মারিনো রিগন বাংলাদেশের অঘোষিত রাস্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন।
এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com