সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের হামছাপুর গ্রামে। কুশিয়ারা নদীর তীরঘেষা এই গ্রামটি এক সময় আয়তনের দিক দিয়ে অনেক বড় ছিল। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, কুশিয়ারা নদীর ভয়াল ভাঙ্গনে হামছাপুর গ্রামের প্রায় অর্ধেক অংশ আজ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
কুশিয়ারা নদীর পাড়ের হামছাপুর গ্রামের প্রায় ৪ একর জায়গা ইতিমধ্যে নদী ভাঙ্গনের ফলে কুশিয়ারা গর্ভে চলে গেছে। এখন প্রতিনিয়মিতই গ্রামটির কোন না কোন অংশ কুশিয়ারা নদীতে ভেঙে পড়ছে। কুশিয়ারা নদীর হামছাপুর গ্রাম অংশের অপরপ্রান্তে মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর অংশটিতে বিশাল চর জাগার কারণেই মুলত এই ভাঙ্গন বলে জানান গ্রামটির বাসিন্দারা।
এই গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান মৃত রইছ উদ্দিন মাস্টারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিনিয়ত নদীভাঙ্গনের কারণে তাদের বসতভিটা থেকে খানিকটা দূরে এসে লাগছে নদীর ঢেউ। শুধু তাদের বাড়িই নয়, এমন চিত্র আশেপাশের প্রায় ২০০ পরিবারের। এই পরিবার গুলো এখন রয়েছে নদী ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে।
স্থানীয়রা জানান, এখানকার ২০০ পরিবারের প্রত্যেকেই ৩-৪ বার করে বসতবাড়ি পরিবর্তন করেছেন। আবার অনেক পরিবারই রয়েছে, যারা নিজেদের বসতভিটা ৫ বার পরিবর্তন করেছেন শুধুমাত্র নদীভাঙ্গনের কারণে।
বালাগঞ্জের বাসিন্দা সিলেট মহানগর বিএনপি’র সহ সভাপতি ব্যারিস্টার রিয়াশাদ আজিম আদনানও জানান, এই ভাঙ্গনরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে তারাও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।
পাশের গ্রামের বাসিন্দা বালাগঞ্জ উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান খেলাফত মজলিস সিলেট জেলা সহসভাপতি মাওলানা সৈয়দ আলী আসগর বলেন ভাঙ্গনরোধে পরিষদ থাকাবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সাথে নিয়ে ভাঙ্গন কবলিত এলাকা একাধিকবার পরিদর্শন করে স্থায়ীভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছি, কিন্তু ভাঙ্গন দেখা দিলে পানি বাড়লে উনারা প্রকল্প হাতে নেয় কাজের কাজ কিছুই হয় না।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম বারী বলেন, নদী ভাঙনরোধে হামছাপুর গ্রামের ৬৫০ মি. দৈর্ঘ্যের একটি প্রকল্পের প্রস্তবনা দেওয়া আছে। আগামী অর্থবছরে এটি অনুমোদন হতে পারে বলে জানান তিনি।এবং গতকাল বিকেলে কুশিয়ারা নদী ভাঙ্গন পরিদর্শন করতে আসেন বালাগঞ্জ থানার তদন্ত অফিসার ফয়েজ আহমেদ।