জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “এ গণ-অভ্যুত্থানের পরে আমাদের সব আশা পূরণ হয়নি। এখনও মনে করি, আমাদের এই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।”
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে নীলফামারী জেলা শহরে জুলাই বিপ্লবের শহীদ রুবেল ও সাজ্জাদের কবর জিয়ারত শেষে এবং সৈয়দপুরে উর্দুভাষী ক্যাম্প পরিদর্শনের পর শহরে এক পথসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “এখনও দেখছি—অভ্যুত্থানের আগের সেই পুরোনো সিস্টেম, পুরোনো কালচার, পুরোনো নিয়মকানুনে ফেরত যাওয়ার চেষ্টা চলছে। শহীদ রুবেল ও সাজ্জাদ আমাদের অনুপ্রেরণা। তাঁরা জীবন দিয়েছেন এমন একটি বাংলাদেশ গড়ার জন্য, যেখানে থাকবে না বৈষম্য, থাকবে না মত প্রকাশের বাধা।”
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “ভাত, কাপড়, শিক্ষা, চিকিৎসা ও কর্মসংস্থানের অধিকার থাকবে—এমন একটি সমৃদ্ধ ও মানবিক বাংলাদেশের জন্য আমাদের ভাই-বোনেরা জীবন দিয়েছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বর্তমান সংবিধান এসব অধিকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।”
বর্তমান সংবিধানকে ‘আওয়ামী লীগের সংবিধান’ ও ‘মুজিববাদের সংবিধান’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “এ সংবিধানকে ছুড়ে ফেলে নতুন সংবিধান তৈরি করতে হবে, কারণ এটি জনগণের নয়, এটি আমাদের মানবাধিকার রক্ষা করতে পারেনি। আমাদের যখন গুম করা হয়েছে, হত্যা করা হয়েছে, তখন এ সংবিধান নীরব ছিল।”
তিনি শহীদ রুবেলের আত্মত্যাগকে অবিস্মরণীয় উল্লেখ করে বলেন, “ছোট ছোট ছেলেরা যারা স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের ও সন্ত্রাসীদের গুলির সামনে বুক পেতে দিয়েছে, তারা যদি স্বপ্ন দেখাতে পারে—তাহলে আমরা কেন তা বাস্তবায়ন করতে পারব না? শহীদদের স্বপ্নের বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতেই হবে।”
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “অভ্যুত্থান কেবল সরকার পরিবর্তনের জন্য নয়, বরং ফ্যাসিস্ট উৎপাদনের সব পথ বন্ধ করার জন্যও প্রয়োজনীয়। সংবিধানের নামে যা আছে, তা আসলে আওয়ামী বিধান। তাই নির্বাচনপূর্ব প্রশাসনিক সংস্কার ও নতুন সংবিধান অনিবার্য।”
পথসভা থেকে এনসিপি নেতারা সংস্কার, বিচার এবং নতুন সংবিধানের দাবি জানান। তাঁরা জানান, দেশের প্রতিটি অঞ্চলে পদযাত্রার মাধ্যমে রাজনৈতিক সচেতনতা সৃষ্টি এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এনসিপি দেশব্যাপী ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলছে।