১৯৬৬ সালের ১১ জুলাই এক হৃদয় বিদারক দিনে সান্দিকোনা হাইস্কুলের তখনকার সময়ে অষ্টম শ্রেণির প্রতিভাবান ছাত্র মো.আব্দুর রাজ্জাক স্কুলের পক্ষ হয়ে আশুজিয়া জেএনসি হাইস্কুল মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্টে খেলতে গিয়ে প্রতিপক্ষের আঘাতে গুরুতর আহত হন। তখন আহত আব্দুর রাজ্জাককে পরদিন গুরুতর অবস্হায় চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়ার পথে সান্দিকোনা বটতলা মোড়ে মৃত্যু বরন করেন ।
সেই আঘাতই কেড়ে নেয় একটি সম্ভাবনাময় জীবনের আলো। মাঠে লড়াই করে মৃত্যুবরণ করেন একজন কিশোর খেলোয়াড়, যার হৃদয়ে ছিল স্কুল, খেলাধুলা এবং দেশের প্রতি ভালোবাসা। স্কুল কর্তৃপক্ষ জীবন উৎসর্গের স্বীকৃতি স্বরূপ তার সম্মানে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কবর দেওয়া হয়।
এটি শুধু একটি সমাধিস্থল নয়, বরং এটি একটি নিঃশব্দ স্মারক—যেখানে প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী হাঁটে, অথচ হয়তো জানেই না এখানে চিরনিদ্রায় শুয়ে আছেন এক অকুতোভয় তরুণ, যিনি খেলাধুলার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।
শহীদ ক্রীড়াবিদ আব্দুর রাজ্জাক ছিলেন নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার গন্ডা ইউনিয়নের গাড়াদিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম মরহুম এগর আলী।
আজ সময় এসেছে, আমরা নতুন প্রজন্মকে জানাই—তাদেরই এক সময়ের সহপাঠী, এক সাহসী খেলোয়াড় আব্দুর রাজ্জাকের কথা। তার আত্মত্যাগকে চিরস্মরণীয় করে রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার।
১৯৬৬ সালে সান্দিকোনা হাইস্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ও বর্তমানে বাটলাড়া গ্রামের ( অব:কর্মকর্তা পানি উন্নয়ন বোর্ড) মো.ছফির উদ্দিন আক্ষেপ করে জানান, শহীদ আব্দুর রাজ্জাকের কবরটি আগাছায় ঢেকে পড়েছে নতুন প্রজন্ম তার সম্পর্কে কিছুই জানে না। তার স্মরণে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি স্মারক ফলক স্থাপন, প্রতি বছর তার স্মরণে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন এবং সংক্ষিপ্ত জীবনী সংরক্ষণ করার মাধ্যমে আমরা তার স্মৃতিকে নতুন করে বাঁচিয়ে রাখতে পারি।
সান্দিকোনা স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক জনাব আনোয়ার উদ্দীন হিরণ বলেন,শহীদ আব্দুর রাজ্জাক নেই, কিন্তু তার স্বপ্ন ও সাহস আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে। তার সংক্ষিপ্ত জীবনী সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এবার থেকেই প্রতি বছর সকলকে নিয়েই মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হবে। আজ তার মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করছি।