২০১৫ সালের ২ আগস্ট, এক বুক স্বপ্ন নিয়ে কাওড়া আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেছিলেন শামীম আহমেদ। ৩০শে জুলাই, ২০১৫ তারিখে সৃষ্ট পদে ছয় জন প্রার্থীর মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে তিনি এই সম্মানজনক পদটি অর্জন করেছিলেন। প্রধান শিক্ষকের আশ্বাসে ভরসা ছিল – স্কুলের কাগজপত্র “সব ওকে”, কেবল ২০১৩ সালের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এমপিওভুক্তি সাময়িকভাবে বন্ধ আছে।
তবে সেই “সাময়িক” অপেক্ষা দশ বছরের বঞ্চনায় রূপ নেবে, তা হয়তো শামীম আহমেদ সেদিন কল্পনাও করেননি। যোগদানের কিছুদিন পরই তিনি জানতে পারেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদটি তৈরির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো অনুমতিই ছিল না। এমপিওভুক্তির জন্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতির আবেদন করা হয়েছে এবং কাগজপত্র বর্তমানে সেখানেই রয়েছে – এই তথ্যই তাঁকে বারবার দেওয়া হচ্ছিল।
একটি সামান্য সম্মানীর বিনিময়ে দীর্ঘ প্রায় দশ বছর ধরে তিনি নিষ্ঠার সাথে শিক্ষাদান করে চলেছেন। ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ গড়ার কারিগর হয়েও, নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে এক অনিশ্চিত যাত্রা তাঁর। এর মধ্যে গত প্রায় এক বছর ধরে সেই সামান্য সম্মানীর পথও বন্ধ হয়ে গেছে।
শামীম আহমেদের এই দীর্ঘ দশ বছরের শিক্ষকতা কেবল একটি পেশা নয়, এটি অদম্য মনোবল এবং সীমাহীন ত্যাগের এক মর্মস্পর্শী গল্প। তিনি এখনো আশায় বুক বেঁধে আছেন, কবে তাঁর অপেক্ষার অবসান হবে এবং তাঁর প্রাপ্য সম্মান ও স্বীকৃতি মিলবে। এই গল্প শামীম আহমেদের একার নয়, এটি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এমন অনেক শিক্ষকের প্রতিচ্ছবি, যারা দিনের পর দিন স্বপ্ন আর বঞ্চনার দোলাচলে সংগ্রাম করে চলেছেন।