1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ০২:১৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
৫৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করলো শ্রীমঙ্গল পৌরসভা নড়াইলে পিকআপ-মটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ! আহত-২ চাঁদাবাজ নির্মূলে আপনার সহযোগিতা প্রয়োজন ত্রিশালে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ ভুরুঙ্গামারীতে ইসলামী ব্যাংকের আউটলেট উদ্বোধন পুলিশ ট্রেইনি রিক্রুটমেন্ট কনস্টেবল পদে আবেদন ভালুকায় দুই শিশু ও মাকে হত্যা’র ঘটনায়, প্রধান আ’সা’মি নজরুলকে গ্রে’ফ’তা’র বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান এক দিনেই তৈরি হয়নি চিলাহাটি রেলস্টেশনে অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমের সূচনা: আন্তর্জাতিক সংযোগের দ্বারপ্রান্তে উত্তরের জনপদ লালমনিরহাট জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত

কিশোরগঞ্জে রেলওয়ে প্রকৌশলী রাজনের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ

ফরহাদ হোসেন
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫
  • ৩৫ বার পড়া হয়েছে

এ বছরের শুরুর দিকে কিশোরগঞ্জে যোগদানের পর থেকেই কার্যালয়ে না এসে গ্রামের বাড়ি মানিকখালি ও কিশোরগঞ্জ শহরের বাসাতেই বেশিরভাগ সময় কাটান তিনি। কালেভদ্রে অফিসে এসে হাজিরা খাতায় সই দিয়ে আবারও চলে যান কিন্তু তার দায়িত্বে থাকা রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ তদারকি করার কথা থাকলেও তা করতে দেখা যায় না।

এদিকে বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে তিন বছরের অধিক কিশোরগঞ্জে কর্মরত থাকায় আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে আনিসুজ্জামান রাজনের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রেলওয়ে শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে গড়ে ওঠে রাজনের রাজত্ব। কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুললেই চলে অন্যত্র বদলির আদেশ। পুনরায় কিশোরগঞ্জে ফিরে পতিত সরকারের দোসরদের সংঘবদ্ধ করে তুলতে পিডব্লিউ রাজন বিভিন্ন কারসাজি করে যাচ্ছেন।

রাজনের অধীনে রেলওয়ের ৭৫ কিমি জায়গা রয়েছে। সেখানে রেললাইনের রক্ষণাবেক্ষণসহ বিভিন্ন কাজ করেন তার অধীনস্থ কর্মচারীরা এবং তা দেখাশোনা করার জন্য রয়েছে একজন হেড মেইট। হেড মেইটের তত্ত্বাবধানে মোট ১১টি গ্যাং প্রতিদিনই রেললাইনের বিভিন্ন অংশে কাজ করে। রেললাইনের পাশে সাধারণ মানুষ কিছু করলেই সেখানে রাজনের অধীনস্থ কর্মচারীরা রেলের প্রভাব কাটিয়ে চাঁদা দাবি করে দেন হুমকি।

এর আগে গত ৩ জুলাই আঠারোবাড়ি গাছ কাটা নিয়ে কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে ওসি মো. লিটন মিয়া ক্লোজড হলেও বহাল তবিয়তে আছেন প্রকৌশলী রাজন। যদিও তার লোকেরাই প্রথমে ওই বাড়িতে গিয়ে গাছ কাটায় বাধা দেন। পরে রাজন সেখানে পুলিশ পাঠান।

অভিযোগ রয়েছে রাজনের অধীনে ৭নং গ্যাংয়ে কর্মরত ওয়েম্যান কাজ না করেও বেতন তুলছেন আর বেতনের একাংশ দিচ্ছেন তাকে। এ বিষয়ে ৭নং গ্যাংয়ে কর্মরত এক ওয়েম্যান বলেন, বর্তমানে ৭নং গ্যায়ে ৫ জন কাজ করার কথা থাকলেও কাজ করছি ৪ জন। ওয়েম্যান এনায়েত কাজ না করে মিস্ত্রি সনজিত ও পিডব্লিউ স্যারকে টাকা দিয়ে হাজিরা খাতায় সই করে বেতন তুলে নিচ্ছে। একই কথা বলেন ৭নং গ্যায়ে কর্মরত আরেক ওয়েম্যান। তিনি জানান, ‘এনায়েত অসুস্থতার জন্য ছুটি নেন। ছুটি শেষ হলেও কাজে না এসে মিস্ত্রি সনজিতের মাধ্যমে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে নেন। একদিন এনায়েত আসলে জিজ্ঞেস করলে বলে মিস্ত্রিকে ৬ হাজার, পিডব্লিউ স্যারকে ৬ হাজার টাকা দিয়ে ম্যানেজ করি। গত ১০-১২ দিন ধরে এনায়েত নিয়মিতই কাজে আসছে কিন্তু এর আগে মাঝেমধ্যে এসে হাজিরা দিয়ে চলে যেত বলে জানান ওয়েম্যানরা।

ওয়েম্যান এনায়েত বলেন, অ্যাক্সিডেন্ট করে হাতে ব্যথা পাই। এরপর ছুটিতে থাকি। ছুটি শেষে কাজ যোগ দিলেও অসুস্থতার কারণে ঠিকমতো কাজ করতে পারি না। অন্যরা কেন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে তা নিয়ে তিনি কিছু জানেন না এবং কোনো টাকা-পয়সার লেনদেন হয়নি বলে তিনি জানান।

রাজনের অধীনে কাজ করা হেড মেইট নাভিদ আহমেদের প্রতিদিনই কোনো না কোনো গ্যাং তদারকি করার কথা। কিন্তু গত জুন মাসের হাজিরা খাতায় দেখা যায় ৬ তারিখ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত টানা ৮ দিন হাজিরা খাতায় তার অবস্থান উল্লেখ নেই। পরবর্তীতে হাজিরা খাতায় দেখা যায় বিভিন্ন গ্যাংয়ে অবস্থানের কথা উল্লেখ রয়েছে।

এ বিষয়ে ৭নং গ্যাং মিস্ত্রি সনজিত রঞ্জন ঘোস বলেন, আমি পরিপূর্ণ কাজ আদায় করার জন্য তাগাদা দেওয়ায় আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। এনায়েত অসুস্থ থাকায় সে ছুটিতে ছিল, বর্তমানে প্রতিদিনই গ্যাংয়ে আসে কিন্তু অসুস্থতার কারণে ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। টাকা দেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে পিডব্লিউ কার্যালয়ের টাইমকিপার নোমান মিয়া বলেন, হেড মেইটের দায়িত্ব পুরো গ্যাং তদারকি করা। একেকদিন একেক গ্যাংয়ের দায়িত্ব পালন করায় হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষরের বদলে শুধু অবস্থান উল্লেখ করা হয়। হেড মেইট নাভিদ আহমেদ ৮ দিন অনুপস্থিত থেকে হাজিরা খাতায় অবস্থান উল্লেখ করার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে স্যারের সাথে কথা বলেন। আমি কিছু বলতে পারব না।

অভিযোগের বিষয়ে কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে উর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী পথ (পিডব্লিউ) আনিসুজ্জামান রাজনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটি চক্র এসব মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে। সব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে তিনি আরও বলেন, আমার নিজের জেলা হওয়ায় আমি ভালো কাজ করে যেতে চাই কিন্তু দুষ্টচক্রটি তাদের স্বার্থ পূরণ না হওয়ায় আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ আহসান হাবিবের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি জানান, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com