ময়মনসিংহ জেলার শিল্প বান্ধব ও ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র ভালুকা উপজেলার পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
এরই অংশ হিসেবে ডাস্টবিন স্থাপন, ব্যাটারি চালিত ভ্যানগাড়ি সরবরাহ, ময়লা পরিষ্কারের সরঞ্জাম (ঝাড়ু, বেলচা, বালতি) প্রদান, উপজেলা চত্বরের আলোকসজ্জা, ট্রাফিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ এবং তাদের জন্য পোশাক, বাঁশি, লাঠি ইত্যাদি সরবরাহ এবং ফুটপাত দখলমুক্ত করণের পাশাপাশি উচ্ছেদকৃত দোকানীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। এসব কর্মকান্ডে উপজেলাব্যাপী ব্যাপক প্রশংসিত হয়ে উঠেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। পরিচ্ছন্ন ভালুকা গড়তে ইউএনও’র উদ্যোগ নজর কেড়েছে উপজেলাবাসীর।
তার মেধাবী পরিকল্পনায় ভালুকা উপজেলাকে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর করার লক্ষ্যে গত ৮ জুলাই ২০২৫ ভালুকা বাসস্ট্যান্ডে মহাসড়কের পাশ থেকে
অবৈধ চা স্টল উচ্ছেদের পর উচ্ছেদ হওয়া দোকানি ও
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুণর্বাসন করতে ২৮টি
লোহার তৈরি বাহারি টি-স্টল নতুন দোকান তৈরী করে ১৫ জুলাই ২০২৫ মালিকদের হস্তান্তর করা হয়। এদের নামকরণ করা হয়েছে মেঘমালা’, ‘তিথিডোর’, ‘চারুদ্বীপ’, ‘উড়োচিঠি’, ‘ছায়াবীথি’নামে। প্রতিটি দোকানে ফুলের টব ও ডাস্টবিন বাধ্যতামূলক এবং ১০ ফুট এলাকা পরিষ্কার রাখার শর্তে এই দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।এসবের সঠিক ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে তাদের অবহিত করা হয়েছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইকবাল হোসাইন ও ভালুকা পৌরসভার কর্মকর্তারা এতে সহযোগিতা করেছেন।
রাস্তার পাশে এসব বাহারি নামের টি-স্টল চোখে পড়বে ময়মনসিংহের ভালুকায়। যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে মহাসড়কের পাশের অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করে সেই দোকানিদের পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে নান্দনিক টি-স্টলগুলো হস্তান্তর করেছে উপজেলা প্রশাসন ও ভালুকা পৌরসভা। ইউএনও’র এই উদ্যোগ ভালুকাকে একটি নান্দনিক উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলছে বলে দাবী করে উপজেলার সচেতন মহল জানান ইউএনও হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের নেতৃত্বে এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ!
দোকান হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইকবাল হোসাইন, উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা জায়েদা ফেরদৌসী, উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা সাইদুর রহমান প্রমুখ।
মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান আবদুল্লাহ আল মাহমুদ পৌর এলাকার ২৮ জনের মধ্যে দোকানগুলো হস্তান্তর করার আগে তিনি ফেসবুকে ঘোষণা দেন, দোকানগুলো বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে না। দোকানদারকে দুটি ফুলের টব কিনতে হবে, একটি ডাস্টবিন কিনতে হবে এবং চারপাশ পরিষ্কার রাখার চুক্তি করতে হবে, তবেই দোকানি একটি দোকান পাবেন।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে ভালুকায় গড়ে ওঠা অস্থায়ী চায়ের দোকানগুলো যানজট ও জনভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। জনস্বার্থে সেই দোকানগুলো উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদ হওয়া দোকানিদের বিনা মূল্যে পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করে প্রশাসন। হস্তান্তরের আগে ভালুকা উপজেলা পরিষদ চত্বরে ছোট ছোট দোকান সারিবদ্ধ করে সাজানো হয়।
দোকান পাওয়া কয়েকজন দোকানিরা বলেন, ‘নিজের দোকানটি ভাঙায় বিপাকে পড়েছিলাম। দোকানের ডাস্টবিন, ফুলের টব ও পরিষ্কার রাখার কথা দিয়ে আজ নতুন একটি দোকান পেয়েছি। দোকানটা পেয়ে ভালো লাগছে। উচ্ছেদ করার পর ফের ব্যবসার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত ফুটপাতের এসব দোকানিরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, “ভালুকাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে সবাইকে সচেতন ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। সরঞ্জামের রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকি শুধু উপজেলা প্রশাসন বা ব্যবসায়ী সমিতির দায়িত্ব নয়, এটি সকলের সম্মিলিত দায়িত্ব। ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে, নালায় আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে, ট্রাফিক আইন মেনে চলা ও ফুটপাতে হকারদের নিয়ন্ত্রণে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।”
ইউএনও আরো বলেন, ‘উচ্ছেদের পর দোকানিরা বেকার হয়ে পড়েন। মানবিক দিক বিবেচনায় তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য বিনা মূল্যে দোকানগুলো দেওয়া হয়েছে। তাঁরা যেন এসব দোকান পরিচ্ছন্ন রাখেন, সাজিয়ে-গুছিয়ে পরিচালনা করেন, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’