স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) অনুমোদনের দাবিতে প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠেছেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে নির্ধারিত কর্মসূচি বর্জন করে আজ সকাল ১০টায় অস্থায়ী ক্যাম্পাস ভবন-৩ এর সামনে তারা মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা দীর্ঘ নয় বছরের প্রতীক্ষা, একাধিকবার সংশোধিত প্রকল্পপত্র এবং প্রশাসনিক অগ্রগতির অভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব হওয়ায় গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ও অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. নজরুল ইসলাম বলেন,
“আজ আমাদের আনন্দের দিন হবার কথা ছিল। অথচ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে আমরা রাজপথে দাঁড়িয়ে আমাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠানের ন্যায্য দাবি আদায়ে কথা বলছি। ডিপিপি অনুমোদনের ক্ষেত্রে সরকারের উদাসীনতা আমাদের বাধ্য করেছে এ অবস্থান নিতে।”
সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান ইয়াতসিংহ শুভ বলেন,
“ডিপিপি এখন পর্যন্ত সাতবার সংশোধিত হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান থেকে ছাড়পত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। এরপরও অনুমোদন না পাওয়া দুর্ভাগ্যজনক এবং প্রশ্নবিদ্ধ। আমরা সন্দেহ করছি, একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী বিষয়টি বিলম্বিত করতে সক্রিয়।”
সহকারী রেজিস্ট্রার শেখ আল মাসুদ বলেন,
“নোবেল বিজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামাঙ্কিত একটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী অবকাঠামো তৈরির দাবিতে রাজপথে দাঁড়াতে হচ্ছে— এটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমরা সরকারের উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের জাকারিয়া বলেন,
“নয় বছর ধরে ভাড়াবাড়িতে চলছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়। এটি শুধু আমাদের জন্য নয়, গোটা দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার জন্যই লজ্জার। আমরা আর আশ্বাসে বিশ্বাসী নই, এবার চাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।”
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মিরাজ বলেন,
“বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আন্দোলন ছাড়া কোনো কাজ এগোয় না। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের প্রকল্প আটকে দেওয়ার পেছনে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান সরাসরি দায়ী। তার পদত্যাগের দাবি জানাই।”
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন সংগীত বিভাগের হৃদয় সরকার, অর্থনীতি বিভাগের সুজানা, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আজিজসহ অনেকেই। তারা বলেন,
ডিপিপি অনুমোদন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন না হলে শিক্ষার্থীরা রেল ও সড়ক অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবে।
সমাবেশে শেষদিকে শিক্ষার্থীরা ‘ডিপিপি অনুমোদন চাই’, ‘রিজওয়ানা হাসানের পদত্যাগ চাই’ ইত্যাদি স্লোগানে প্রকম্পিত করে তোলে পুরো এলাকা।