সিমান্ত এলাকায় অস্ত্র, মাদক ও মানব পাচারসহ যেকোন অপরাধ দমনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। দুইজন কিশোরকে পাচারের সময় টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) বিশেষ অভিযানে পাচারকারী চক্রের ০১ জন ধরা পড়েছে।
নিজস্ব গোয়েন্দা সুত্রে জানা যায়, চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে মায়ানমারে মানব পাচারে একটি চক্র সম্প্রতি সক্রিয় হয়েছে। আরো জানা যায় যে, চক্রটি বাংলাদেশে অবস্থানরত ০১ জন এফডিএমএন সদস্যের দ্বারা ০২ জন বাংলাদেশী নাগরিককে সীমান্ত দিয়ে মায়ানমারে পাঠাবে। পাচারকারীদের অপতৎপরতা রুখতে, ব্যাটালিয়ন অধিনায়কের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে, ২ বিজিবির বেশ কয়েকটি অভিযান দল এবং নিজস্ব গোয়েন্দারা মাঠে নামে। প্রাথমিক ভাবে পাচারকারীরা ভুক্তভোগী কিশোরদের নিয়ে কক্সবাজার হতে বড়ইতলি আসে এবং বিজিবির তৎপরতা লক্ষ্য করে কেরানতলী এলাকায় অবস্থান নেয়। এসময় সাড়াশী অভিযান চালিয়ে ০২ জন বাংলাদেশী কিশোরকে উদ্ধার এবং পাচারকারী চক্রের ০১ জনকে আটক করা হয়। তবে, নূর হাসান নামে একজন পাচারকারী পালিয়ে যেত সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মায়ানমারে মানব পাচারের বিষয়ে সত্যতার প্রমান পাওয়া যায়। আসামি জানায় মায়ানমারের অভ্যন্তরে অবস্থানরত পাচারকারী চক্রের একজন সদস্য আমিন এবং তার যোগসাজশে বাংলাদেশী নাগরিকদের অবৈধভাবে মায়ানমারে পাঠানো হয়। পরে, ক্ষেত্রবিশেষে তার সহযোগিতায় ভুক্তভোগীদেরকে মায়ানমার হয়ে মালয়েশিয়া গমনের ব্যবস্থা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী এবং স্থানীয়দের মতে চক্রটি বেশ কিছুদিন যাবৎ মাদক ও মানবপাচারসহ এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। এদের বিরুদ্ধে অতিতে মাদকপাচারসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ থাকলেও সন্ত্রাসীরা আইনের ফাঁক গলে বাইরে বেরিয়ে অবাধে মানব ও মাদক করছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। ফলে, মানব পাচার চক্রের ০১ জন গ্রেফতার হওয়ায় জনমনে স্বত্বির ছায়া নেমে আসে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের উপর ভিত্তি করে চক্রের সকলকে বিচারের আওতায় আনতে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) কর্তৃক কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে। বর্তমানে, সোমবার সকালে পরিচালিত অভিযানে গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে প্রচলিত আইন অনুসারে স্থানীয় থানায় হস্তান্তর এবং মামলা রুজু করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। *ধৃত ও পলাতক আসামীদের এবং উদ্ধারকৃত বাংলাদেশী কিশোরদের (ভিকটিম) পরিচয় নিম্নরুপঃ*
*ধৃত আসামীঃ*
ক। মোঃ রাসেদ (১৮), পিতা- সৈয়দ আলম, কুতুপালং ক্যাম্প (০১), ব্লক সি/১৩, থানা-টেকনাফ এবং জেলা-কক্সবাজার।
*পলাতক আসামীঃ*
ক। নুর হাসান (৩০), পিতা- মৃত সিদ্দিক, গ্রাম-বরইতলী , পোস্ট+থানাঃ টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার।
*উদ্ধারকৃত বাংলাদেশী নাগরিক (ভিকটিম)*
ক। মোঃ মাহিম (১৫), পিতা-আইয়ুব খান, গ্রাম-কক্সবাজার লাল দিঘির পাড়, পোস্ট- লাল দিঘির পাড়, থানা+জেলা- কক্সবাজার।
খ। মোঃ সোহেল (১৬), পিতাঃ জসিম, গ্রাম-কক্সবাজার লাল দিঘির পাড়, পোস্ট- লাল দিঘির পাড়, থানা+জেলা- কক্সবাজার।
৩। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দেশের সীমান্ত নিরাপত্তা, মানবপাচার, মাদক নির্মূল এবং সকল অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতি বজায় রেখে অত্যন্ত পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও জাতীয় নিরাপত্তা ও জনস্বার্থে এ ধরনের বিশেষ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
*লেঃ কর্নেল আশিকুর রহমান, পিএসসি*
অধিনায়ক
টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি)