দীর্ঘদিন ধরে এই কলেজের ড্রেস কালো হলেও সম্প্রতি প্রশাসন তা পরিবর্তন করে সাদা করার উদ্যোগ নিয়েছে।
তৎকালীন অধ্যক্ষ আব্দুল হালিম স্যারের সময়ে ছাত্রদের দাবির প্রেক্ষিতে কালো ড্রেস চালু করা হয়। জানা যায়, ঢাকার স্বনামধন্য ক্যামব্রিয়ান কলেজের ড্রেসও কালো ছিলো, সেখান থেকেই প্রভাবিত হয়ে হাজারী কলেজে এ ড্রেস চালু হয়। এক সভায় অধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের মতামত জানতে চাইলে অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী কালোর পক্ষে মত দেন।
এর আগে সাদা-নেভি ব্লু রঙের ড্রেস ব্যবহৃত হতো, যা ফেনীর বিভিন্ন স্কুল ড্রেসের সঙ্গে মিলে যেত। এতে শহরে কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সহজে চেনা যেত না।
কালো ড্রেস চালুর পর থেকে হাজারী কলেজের শিক্ষার্থীরা অন্যদের কাছে আলাদা পরিচয়ে স্বীকৃতি পায়।
অন্যদিকে, কালো ড্রেসের বিরোধীদের যুক্তি হলো—কালো পোশাক সাদা কাপড়ের তুলনায় বেশি তাপ শোষণ করে, এতে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। তবে শিক্ষার্থীরা পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলছে, সাদা-নেভি ড্রেস ব্যবহারের সময়ও হিট স্ট্রোকে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে (২০০৮ সালে ধর্মপুর ইউনিয়নের ছাত্রী রোজিনা আক্তার শ্রেণিকক্ষে মারা যান), অথচ কালো ড্রেস চালুর পর তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
তারা আরও যুক্তি দেখাচ্ছে—বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী অসংখ্য নারী কালো বোরকা পরে, আইনজীবীরাও কালো ড্রেস পরেন, এমনকি সৌদি আরবের আবহাওয়ায়ও সারা বছর কালো বোরকা ব্যবহার করা হয়। (তথ্য সূত্র: সাবেক ছাত্র, ফরহাদ হোসেন পলাশ)
এদিকে, বর্তমান শিক্ষার্থীরা ড্রেস পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। গতকাল তারা অধ্যক্ষকে স্মারকলিপি দিতে চাইলে তিনি তা গ্রহণ করেননি।
পরে শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপি তার রুমে রেখে আসেন। শিক্ষার্থীরা ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে জানিয়েছে, আগামী রবিবার সকাল ১০টার মধ্যে অফিসিয়াল ঘোষণা না দিলে তারা বিক্ষোভে নামবে।
শিক্ষার্থীদের ঘোষণা—
“কালো ড্রেস আমাদের কলেজের আলাদা পরিচয়ের প্রতীক। এ ড্রেস পরিবর্তন করা মানে আমাদের ইতিহাস ও পরিচিতি মুছে ফেলা।”
“কালো আছে, কালো থাকবে। প্রয়োজন হলে কলেজ ক্যাম্পাস কাঁপবে।”