লালমনিরহাট জেলার তিস্তা নদীর উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও এক রাতেই পানি কমে লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। প্লাবিত লোকালয় থেকে পানি অনেকটাই নেমে গেছে। এতে বেরিয়ে আসছে বন্যার ক্ষত চিহ্ন।(৭ অক্টোবর) সকাল ছয়টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে সোমবার ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপরে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছিল।
হঠাৎ এ বন্যায় সোমবার জেলার পাঁচ উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে লাখো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছিল। এতে নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের ত্রিশটি গ্রাম পানিবন্দী হয়ে পড়ায় চরম দুর্ভোগ দেয়। এক রাতেই পানি নেমে বন্যা পরবর্তীতে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। কাচা পাকা রাস্তা পানির তোড়ে বিভিন্ন স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ক্ষত ভেসে উঠেছে। বাড়িঘর ও আশেপাশের পরিবেশ কর্দমাক্ত হয়ে আছে। ফসলি জমিতে এখনো পানি জমে থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
বিশেষ করে আমন ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা তৈরি হয়েছে। আর এক মাসের মধ্যেই এসব ধান মাড়াই করা যেতো। ইতোমধ্যে অনেক ধানক্ষেতে শীষ আসাসহ ধান পাকতেও শুরু করেছিল। এই অবস্থায় পানি জমাট বাধায় এসব ফসল নষ্ট হওয়ার উপক্রম তৈরি হয়েছে।
এদিকে, পানি কমে যাওয়ায় বানভাসিরা বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করেছে। অনেকেই সোমবার রাতেই বাড়িতে ফিরেছেন। গরু ছাগল নিয়ে নতুন করে সাজাতে শুরু করেছেন নিজেদের। বাড়ির আশেপাশের পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করছেন। ফসলের ক্ষেতে ভেসে আসা জঙ্গল ও কচুরিপানা পরিষ্কার করছেন।
আদিতমারী উপজেলার গোবর্ধন এলাকার মোজাফফর হোসেন বলেন, আর ২০-২৫ দিন পর ধান পাকা শুরু করতো। এক মাসের মধ্যে এসব ধান ঘরে তুলা যেতো। হঠাৎ পানি এসে ধানক্ষেত ডুবে আছে। আরও দুই-একদিন যদি এভাবে থাকে এতে ফসলের ক্ষতি হতে পারে।
বন্যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বানভাসিদের পাশে দাঁড়াতে প্রশাসন পরিকল্পনা নিয়েছে। তারা জানিয়েছে, দ্রুত তালিকা তৈরি করে বানভাসিদের সহায়তা দেয়া হবে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। ইতোমধ্যে পানি নেমে গেছে। আগামী দুই থেকে তিন দিনে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। কোথাও ভাঙন দেখা দিলে আমরা তা মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছি।