ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনাসভা বর্জন করেছে শাখা ছাত্রদল। শনিবার (২২ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে আলোচনাসভা ত্যাগ করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে দুই পর্বে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। প্রথম পর্বের অনুষ্ঠানে শাখা ছাত্রদল অংশ নেয়। প্রথম পর্বে বেলা সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে জাতীয় পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন, কেক কাটা এবং শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে আনন্দ র্যালি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। তবে বিভিন্ন অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে সভা বর্জন করে শাখা ছাত্রদল। সংগঠনটির নেতাকর্মীদের অভিযোগ—বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গত বছরের চেয়ে এ বছর খারাপ আয়োজন করেছে। আমরা দিবসে প্রতিটি হলে ফিস্টের আয়োজন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা অগ্রাহ্য করেছে। তারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চিত্র বাদ দিয়ে ইরানি ফিল্ম দেখাচ্ছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কোথাও কোনো নাম দেওয়া হয়নি। তার নামে থাকা হলটিও সজ্জিত করা হয়নি। এ ক্ষেত্রে প্রশাসন অর্থ সংকটের কথা বলছে।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে প্রশাসন তেমন কোনো আয়োজন করতে পারেনি। গত বছরের চেয়েও এবারের অনুষ্ঠান খারাপ হয়েছে। অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির মিটিংয়ে আমরা হলে ফিস্টের আয়োজন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করার দাবি জানিয়েছি। তারা অগ্রাহ্য করেছে। তারা ২০ মিনিটের কর্মসূচি করতে চেয়েছিল। হয়তো আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে অনুষ্ঠান একটু বড়ো করেছে। ইরানি ফিল্ম প্রদর্শন করবে, কিন্তু এটা অপ্রয়োজনীয়। তারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত–নিহতদের নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করতে পারতো। প্রশাসন তাদের মতো আয়োজন করেছে। আমাদের নামমাত্র ডেকেছে। তারা শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম ও ছবি কোথাও দেওয়া হয়নি। প্রশাসন একটি কেক কেটেছে, কিন্তু সেখানে লুট উৎসব হয়েছে। আমরা প্রশাসনের এমন আয়োজনের নিন্দা জানাচ্ছি ও অনুষ্ঠান প্রত্যাখ্যান করছি। প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নামের হলটি ও খালেদা জিয়া হলটি বঞ্চিত করা হয়েছে। হল দুটিতে কোনো সাজসজ্জা করা হয়নি। প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। তারা অর্থ সংকট দেখাচ্ছে। প্রশাসনের অবহেলার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে আছে।
এ বিষয়ে অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আলীনুর রহমান বলেন, অনুষ্ঠানে ভুল–ত্রুটি থাকবে। তবে বাজেট সীমাবদ্ধতায় সকল আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। আগামীতে আরও বড় পরিসরে আয়োজন করা হবে ইনশাআল্লাহ।