পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলায় পরকীয়ার সন্দেহকে কেন্দ্র করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে এক ইউপি সদস্য ও তার ভাবীকে। একই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ইউপি সদস্যের স্ত্রী।
শুক্রবার (২৭ জুন) রাত ১১টার দিকে উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের পশ্চিম চর বলেশ্বর গ্রামে এ হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে।
নিহত শহিদুল ইসলাম (৫০) ওই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। অপর নিহত মুকুলী বেগম (৪৮) শহিদুলের বড় ভাই মর্তুজা হাওলাদর এর স্ত্রী। শহিদুল ইসলামের মেঝ ভাই মনিরুজ্জামান সেলিম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
নিহতের পরিবারের দাবি, ঘটনার রাতে শহিদুল ইসলাম ফকিরহাট বাজার থেকে ফিরে পুকুরঘাটে বসেছিলেন। এ সময় ওঁত পেতে থাকা পাশের বাড়ির প্রবাসী ইউনুস শেখের নেতৃত্বে কয়েকজন সশস্ত্র ব্যক্তি তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। চিৎকার শুনে তার স্ত্রী রেহেনা বেগম ও ভাবী মুকুলী বেগম বাইরে আসলে তাদেরও কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে ঘটনাস্থলেই মুকুল বেগম মারা যান এবং শহিদুলের স্ত্রীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিহতের মেয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুমনা আক্তার জানান, “বাবা ঘরে ফেরার পর পুকুরপাড়ে বসেছিলেন। হঠাৎই ইউনুস শেখ ও তার লোকজন এসে বাবাকে কোপাতে থাকে। মা আর চাচী দৌড়ে গেলে তাদেরও কুপিয়ে ফেলে।”
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রবাসী ইউনুস শেখের স্ত্রীর শ্যামলী খাতুন এর সঙ্গে শহিদুল ইসলাম এর পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সন্দেহ ও দ্বন্দ্ব ছিল। গত এক মাস পূর্বে এ নিয়ে শালিস বৈঠক হয়। এরপর শ্যামলী খাতুন বাবার বাড়ি চলে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এ কারণেই পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। এমনকি হত্যার পর শহিদুল ইসলামের পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলা হয় বলেও দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
ইন্দুরকানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মারুফ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “পরকীয়ার জেরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ইউনুস শেখ ও তার সহযোগীরা মিলে শহিদুল ইসলাম ও তার ভাবীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। তার স্ত্রীকেও গুরুতর জখম করা হয়েছে।”
এ ঘটনায় শনিবার সকালে শহিদুলের বড় ভাই মর্তুজা হাওলাদার বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২ জনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ওসি আরও জানান, “ইতোমধ্যে অভিযুক্ত ইউনুস শেখের বড় ভাই রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।”