সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) অফিসের নৈশপ্রহরী আলমাস হোসেনের বিরুদ্ধে সেচ লাইসেন্স প্রদানের নামে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ হওয়ার পর তাকে রক্ষায় উপজেলা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব নিক্সন কুমার আমিন ও সাইফুল ইসলাম বাবলুর নেতৃত্বে ভুক্তভোগী আবেদনকারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে নৈশপ্রহরী আলমাস হোসেন সেচ লাইসেন্স দেওয়ার প্রলোভনে সাধারণ কৃষকদের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হলে সাকিবুর রহমান মাসুম, জুয়েল মন্ডলসহ প্রায় এক ডজন ভুক্তভোগী জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বিএডিসির উচ্চ পর্যায়ে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৩ জুলাই, বুধবার সকালে বিএডিসি’র প্রধান কার্যালয় থেকে উর্ধতন ভূতত্ত্ব বিদ শেখ মোঃ সাইফুল ইসলাম তদন্তে আসেন। তদন্তকালে আলমাস হোসেন নিজেই স্বীকার করেন যে, তিনি আবেদনকারীদের কাছ থেকে সাত লাখ সাতশত টাকা নিয়েছেন। ওইদিন দুপুর ২টার দিকে কর্মকর্তারা তাকে টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন।
তবে টাকা ফেরত না দিয়ে, আলমাস হোসেন সময় চেয়ে অফিস ত্যাগ করেন। সন্ধ্যা ৬ টার দিকে উপজেলা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব নিক্সন কুমার আমিন ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আজাদ হোসেনের ছোট ভাই, সাইফুল ইসলাম বাবলুর নেতৃত্বে ২০ থেকে ৩০ জন যুবক বিএডিসি অফিসে অনধিকার প্রবেশ করে। তারা ভুক্তভোগীদের মারধর করে অফিস থেকে বের করে দেয় এবং টাকা না দিয়েই বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। এরপর জুয়েল নামের এক ভুক্তভোগী আহত অবস্থায় থানার মোড়ে গেলে দুর্বৃত্তরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাকে তাড়া করে সেখান থেকেও সরিয়ে দেয়।
এ ঘটনার পর স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা দ্রুত দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
উল্লাপাড়া উপজেলা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব নিক্সন কুমার আমিন জানান, আমার এক নেতা আমাকে ফোন করে বিএডিসি অফিসে যেতে বলেছে, তাই আমি বিএডিসি অফিসে গিয়েছিলাম। মারামারির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তেমন কিছু হয়নি, তবে বাবলু ভাইকে, একটা ছেলেকে অফিস থেকে বের করে দিতে দেখেছি।
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) রাকিবুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।