বিএনপিকে সহিংসতা না করার আহ্বান জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, সামনের একটা দুইটা তিনটা মাস গুরুত্বপূর্ণ সময়।
যারা সকাল-বিকাল আপনাদের স্বপ্ন দেখিয়েছিলো যে আগামীকাল ক্ষমতায় আসবেন, সরকার পড়ে যাবে৷ বাচ্চা বাচ্চা ছেলেগুলো যারা গাড়িতে আগুন দিচ্ছে, বোম মারছেন, ককটেল ফাটাচ্ছেন, তারা তো ৩৪/১ এই ধারায় পড়ে যাবে৷
ইতোমধ্যে তাদের বাবা-মা আমার কাছে কান্না করছেন, কিন্তু আমি কী করবো। যা হওয়ার হয়ে গেছে, সামনে যাতে আর না হয়। রাজনীতি মহৎ পেশা, কিন্তু জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে অনেকেই একে ধান্দা হিসেবে নিয়ে রাজনীতিকে পঁচিয়ে ফেলেছে। রাজনীতি করুন, আমার বিরুদ্ধে বলুন, কিন্তু সহিংসতা করবেন না। আমার এই কথাকে কেউ দুর্বলতা ভাববেন না।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব ভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন৷ মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ভূমিদস্যুতা ও ইভটিজিং বন্ধে অঙ্গীকার ব্যক্ত করে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে অনেক রাস্তা, স্কুল-কলেজ হয়েছে, এতে মানুষ খুশি হয়েছে। কিন্তু এবার আমি মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ইভটিজিং, ভূমিদস্যুতা বন্ধ করতে চাই। এই মাদক থেকেই কিশোর গ্যাং, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির সৃষ্টি হয়৷ এর সাথে হয়তোবা আমার সাথের লোকজন, পুলিশ, প্রশাসন, সাংবাদিকেরা জড়িত আছেন৷ মাদক বন্ধ করা আমাদের ডিউটি না, এটি পুলিশের কাজ। তবুও আল্লাহকে খুশি করতে মাঠে নামছি। আমার মৃত্যুর পরে যাতে আপনাদের মন খারাপ হয়। কিন্তু এই সমস্যা আমার একার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়। কাবা শরিফের সামনে দাঁড়িয়ে আমি যে ওয়াদা করেছিলাম, সেই কাজ আমি শুরু করতে চাই৷ এতে সমাজের সবাইকে পাশে চাই৷
সামাজিক সমস্যাগুলো সমাধানে ‘প্রত্যাশা’ নামের একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে এই সংগঠনে। সিনিয়রেরা তাদেরকে দিকনির্দেশনা দিবেন৷ প্রয়োজনে ডোপ টেস্ট করে তাদেরকে নেওয়া হবে যাতে রক্ষকই ভক্ষক হয়ে না যায়৷ এই পরিকল্পনার মধ্যে কোনো রাজনীতি নেই৷ সকল দল, শ্রেণি-পেশার মানুষকে আমি আহ্বান জানাচ্ছি।
আগামীতে আর নির্বাচন করতে চান না জানিয়ে প্রভাবশালী এই আওয়ামী লীগ নেতা আরো বলেন, ১৯৯৯ সালে নিষিদ্ধ পল্লী পুর্নবাসন করেছি আল্লাহকে রাজি-খুশি করতে৷ ভালো কাজ করতে গেলে বাধা আসবেই৷ হয়তোবা আগামীতে আর নির্বাচন করবো না। তবে আমার মা-বাবার মৃত্যুর পর আমার অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ তিনি যদি আমাকে বলেন ছাড়তে, আমি ছাড়বো। ধরতে বললে ধরবো ৷
আগামী ২৭ জানুয়ারি সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামত জানতে নারায়ণগঞ্জে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের কথাও জানান এই সংসদ সদস্য৷ তিনি বলেন, প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে ক্লাব করে সাংগঠনিক কাজগুলো করা হবে।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন৷