কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙা ইউনিয়নের ধর্মপুর সীমান্তে পাচার করে আনা ভারতীয় গরু উদ্ধার করতে গিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা।
১৫ ই জানুয়ারি (সোমবার)২০২৪ সকালে উপজেলার ধর্মপুর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দাঁতভাঙা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহজাহান আলী সংঘর্ষের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে গ্রামের কয়েকজন ও বিজিবির একাধিক সদস্য আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে বিজিবি ৩৫ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসী ও চেয়ারম্যান রেজাউল করিম জানান, রৌমারীর ধর্মপুর ও ভারতের কুকুরমারা সীমান্তপথে স্থানীয় চোরাকারবারিরা ভারতীয় গরু পাচার করে ধর্মপুর গ্রামে জড়ো করেছে। সোমবার সকালে এমন সংবাদের ভিত্তিতে জামালপুর বিজিবি ৩৫ ব্যাটালিয়নের অধীন দাঁতভাঙা কোম্পানি ক্যাম্পের পাঁচ-ছয় জন সশস্ত্র বিজিবি সদস্য ধর্মপুর গ্রামে যান। তারা সেখানে গিয়ে ধর্মপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে জড়ো করা বেশ কিছু ভারতীয় গরু আটক করেন। এ সময় গরু পাচারে জড়িত চোরাকারবারি, তাদের সহযোগী ও স্থানীয় নারী-পুরুষ মিলে বিজিবিকে বাধা দেয়। বিজিবি লাঠিচার্জ করলে তারাও লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। একপর্যায়ে বিজিবির এক সদস্যের লাঠির আঘাতে মঞ্জু নামে স্থানীয় এক গরু পাচারকারীর স্ত্রীর মাথা ফেটে যায়। তখন এলাকার লোকজন উত্তেজিত হয়ে বিজিবি সদস্যদের অবরুদ্ধ করে ফেলে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের পর বিজিবি সদস্যরা গরু ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহজাহান আলীর সহায়তায় বিজিবি সদস্যরা গরু ছাড়াই এলাকা ত্যাগ করে ক্যাম্পে ফিরে যান।
ইউপি সদস্য শাহজাহান আলী বলেন, ‘বিজিবির সঙ্গে মারামারিতে নারীসহ উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। বিজিবি ব্যাপক লাঠিচার্জ করেছে। চোরাকারবারি ও তাদের সহযোগীরাও লাঠি নিয়ে বিজিবি সদস্যদের ধাওয়া করেছে। এতে সংঘর্ষ বাধে। বিজিবির লাঠির আঘাতে এক নারীর মাথা ফেটে গেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিজিবি সদস্যদের উদ্ধার করে গাড়িতে তুলে দিয়েছি।’
ভারতীয় গরু উদ্ধারে গিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে বিজিবির দাঁতভাঙা কোম্পানি কমান্ডারের মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে রিসিভ করেননি।
রৌমারী থানার ওসি আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, ‘বিজিবি ও গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের বিষয়টি শুনেছি। তবে কোনও পক্ষই থানায় অভিযোগ দেয়নি।’
সার্বিক বিষয়ে জানতে জামালপুর বিজিবি ৩৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুলাহ আল মাসরুকীকে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি। পরে পরিচয় দিয়ে বক্তব্য জানতে তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে মেসেজ দিলেও কোনও উত্তর দেননি।