অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, তামাক ও ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ধূমপান থেকেই পরবর্তীতে মাদকের দিকে অনেকের যাত্রা শুরু হয়। তামাক মানবদেহের প্রায় সব অঙ্গের ক্ষতি করে। দেশে তামাকের উৎপাদন বন্ধ করা দরকার। তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে ব্যক্তিপর্যায়ে সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, সিগারেট খেলেই স্মার্ট হওয়া যায় না, বরং শারীরিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। তামাকের কুফল সম্পর্কে ধরণা দিতে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভা, সমাবেশ ও উঠান বৈঠক আয়োজন করা প্রয়োজন। মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে হলে ধূমপানকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সরকার ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে ধূমপানমুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে সববয়সী মানুষের মাঝে ধূমপান বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করার আহবান জানান বিভাগীয় কমিশনার।
সভায় জানানো হয়, বছরে দেশে এক লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ তামাকজাত দ্রব্য সেবনের প্রতিক্রিয়ায় মৃত্যুবরণ করে। বর্তমানে দেশে ৩০ বা তদুর্ধ্ব বয়সীদের মধ্যে ৭০ লাখের অধিক মানুষ তামাক সেবনজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে ১৫ লক্ষাধিক মানুষ তামাকজনিত দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত। এছাড়া ৬১ হাজারের অধিক শিশু বাড়িতে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার। ১৫ বছরের কমবয়সী শিশুর মধ্যে চার লাখ ৩৫ হাজারের বেশি শিশু তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। বাংলাদেশে ৯০ শতাংশ ফুসফুস ক্যান্সারের জন্য ধূমপান দায়ী। তামাকের ধোঁয়ায় সাত হাজারের বেশি ক্ষতিকর রাসায়নিক রয়েছে, যা শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি করে। পরোক্ষ ধূমপানের প্রভাবে অধূমপায়ী ব্যক্তির হৃদরোগ, ষ্ট্রোক, ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) আবু সায়েদ মোঃ মনজুর আলম, আনসার ও ভিডিপির পরিচালক এ এস এম আজিম উদ্দিন, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. সৈকত মোঃ রেজাওয়ানুল হক ও সহকারী পুলিশ কমিশনার মো: শিহাব করিম। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের জেলা টাস্কর্ফোস কমিটির সদস্য কাজী মোহাম্মদ হাসিবুল হক। জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সহযোগিতায় খুলনা বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠান শেষে বিভাগীয় কমিশনার রচনা প্রতিযোগিতার বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদপত্র ও পুরস্কার বিতরণ করেন।
দিবসটি উপলক্ষ্যে এর আগে নগরীর শহিদ হাদিস পার্ক থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন ।