গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রশ্নে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে অবিলম্বে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং গাজায় ত্রাণ সহায়তা অবাধে প্রবেশের দাবিতে বুধবার (৪ জুন) বিকালে ওই ভোটের আয়োজন করা হয়েছিল। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ভোটের আগেই জাতিসংঘে ভারপ্রাপ্ত মার্কিন প্রতিনিধি ডরোথি শেয়া বলেন, যে সব প্রস্তাবে হামাসের নিন্দা জানানো হয় না এবং তাদের নিরস্ত্রীকরণ ও গাজা ত্যাগের দাবি থাকে না, যুক্তরাষ্ট্র সেখানে সমর্থন দেবে না। আমরা এ কথা স্পষ্ট জানিয়েছি।
জাতিসংঘের এই প্রস্তাব গাজায় যুদ্ধবিরতি অর্জনে মার্কিন প্রচেষ্টা ক্ষুণ্ন করে বলেও দাবি করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ইসরায়েলের বৃহত্তম মিত্র এবং অস্ত্রের জোগানদাতা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্র বাদে নিরাপত্তা পরিষদের বাকি ১৪ সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। পরিষদে ১০ অস্থায়ী সদস্য এবং ভেটো ক্ষমতাসহ পাঁচ স্থায়ী সদস্য রয়েছে। স্থায়ী সদস্যদের একজনও বিরোধিতা করতে নিরাপত্তা পরিষদ কোনও প্রস্তাব অনুমোদন করতে পারে না।
যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হামাস। তাদের দাবি, যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে ইসরায়েলের প্রতি নিজেদের অন্ধ সমর্থন প্রকাশ করেছে মার্কিন প্রশাসন।
জাতিসংঘের প্রস্তাবে হামাসের হাতে থাকা সব জিম্মির অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিও ছিল।
গাজায় প্রায় ১৫ মাসের সামরিক আগ্রাসন শেষে গত জানুয়ারিতে নাজুক এক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়, যা মাস দুই পর মার্চে ভেঙে পড়ে। তখন থেকেই আবারও হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। আর হামাস ত্রাণ লুট করে নিজেদের পুনর্গঠিত করছে- এই অভিযোগে ত্রাণ সহায়তায়ও মারাত্মকভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে তেল আবিব।
ভোট গ্রহণের দিনেও ইসরায়েলি হামলায় ৪৫ জন নিহতের খবর জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও মানবিক সহায়তা সীমিতকরণের সমালোচনা করে জাতিসংঘে স্থায়ী ব্রিটিশ প্রতিনিধি বারবার উডওয়ার্ড বলেছেন, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সম্প্রসারণ এবং মানবিক সহায়তায় বাধা দেওয়া অযৌক্তিক, মাত্রাতিরিক্ত এবং বিপর্যয়কর।
এদিকে, বৈশ্বিক সমালোচনা ও দাবি মুখেও গাজায় নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির আহ্বান খারিজ করে দিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। তাদের যে কোনও আলোচনার পূর্বশর্ত, হামাসকে গাজা ত্যাগ করতে হবে।
গতকাল প্রস্তাবের পক্ষে ভোট প্রদানকারীদের উদ্দেশ্য করে জাতিসংঘে ইসরায়েলের স্থায়ী প্রতিনিধি ড্যানি ড্যানন বলেন, আপনারা আপস ও আত্মসমর্পণের পথ বেছে নিয়েছেন। আপনাদের পথে শান্তি নয় কেবলই ভয়াবহতা অপেক্ষা করছে।